যশোরের মণিরামপুরে নিয়ন্ত্রণহীন কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পিতা-পুত্র, দাদা-নাতিসহ ৫জন নিহত আহত অন্তত: ৬

যশোরের মণিরামপুরে নিয়ন্ত্রনহীন কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় পিতা-পুত্র, দাদা-নাতিসহসহ ৫ জন নিহত এবং অন্তত: ৬ জন আহতসহ বিভিন্ন ধরনের ১০টি দোকানঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের মণিরামপুরের বেগারীতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় উত্তেজিত এলাকাবাসি ব্যারিকেড দিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে পুলিশ ব্যারিকেড তুলে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার সকাল ৭টার কিছুক্ষন পরেই যশোর-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়কে সাতক্ষীরা গামী একটি কাভার্ড ভ্যান (ঢাকা মেট্রো-ন-২০-১৭৫১) মণিরামপুরের বেগারীতলা নামক বাজার অতিক্রম করার সময়ে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে প্রথমে পথচারী টুনিয়াঘরা গ্রামের মৃত সোরু দফাদারের পুত্র হাবিবুর রহমান (৫২) ও হাবিবুরের পুত্র তাওসি (৭) কে ধাক্কা দেই এবং রাস্তার পাশে নূরুল আমিনের চায়ের দোকানসহ ৮/১০টি দোকানের আংশিক আঘাত করতে করতে সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে খান আবু তালেবের হোটেলে ধাক্কা দিয়ে আটকে যায়। চায়ের দোকান ও হোটেলের অন্যান্য খরিদদার, কর্মচারী ও মালিক দ্রæত সরে যেতে সক্ষম হলেও পথচারী হাবিবুর ও তার পুত্র তাওসি, নূরুল আমিনের চায়ের দোকানের খরিদদার টুনিয়াঘরা গ্রামের মৃত মীর রফিজ উদ্দীনের ছেলে মীর সামছুর রহমান (৬০), ও সামছুর রহমানের নাতি নাতি মীর তৌহিদুল ইসলাম (৩৫) এবং হোটেলের সামনে দাড়িয়ে থাকা জয়পুর গ্রামের আব্দুল মোমিনের পুত্র শ্রমিক জিয়াউর রহমান (৩৫) কাভার্ড ভ্যানের চাপায় ও ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিহতের কাভার্ড ভ্যানের নীচ ও ভেঙ্গে পড়া দোকানের ভিতর থেকে বের করে। এদিকে ঘটনার পরপরই কাভার্ড ভ্যানের চালক ও চালকের সহকারী পালিয়ে গেছেন বলে স্থানীয়রা জানান। এতে ৫ জন নিহত সহ চায়ের দোকান ও হোটেলের খরিদদার মনির উদ্দীন, নজরুল ইসলাম, পল্টুসহ অন্তত: ৬ জন আহত হয়েছে। তবে আহতের অবস্থা তেমন গুরুত্বর নয়।

ঘটনার পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশ এসে আড়াই ঘণ্টা পর বেলা ১০টার দিকে ব্যারিকেড সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে। পুলিশ নিহতদের মহদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনালেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোঃ মনিরুজ্জামান।

হোটেল মালিক খান আবু তালেব জানান, মালামালসহ আমার দোকানের প্রায় ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সেটা হয়তো আর ফিরে পাবো না-কিন্তু আমার দোকানের কর্মচারীসহ আমরা জানে বেচেঁ গেছি সেটাই আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কাভার্ড ভ্যানটা ৫ জনের জীবন কেড়ে নিয়েছে। ভ্যানের ধাক্কায় ৮/৯টা দোকানের আংশিকসহ আবু তালেবের সম্পূর্ণ দোকান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সাথে অকালেই ঝরে গেলো ৫ জীবন। আমরা চালকের উপযুক্ত শাস্তি দেখতে চাই।
এ ঘটনায় দূর্ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন মণিরামপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) মোঃ আলী হোসেন, থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান।

এ মর্মান্তিক ঘটনার খবর শুনে গভীর শোক প্রকাশসহ নিহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য (এমপি)। যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনির।