শীতের শুরুতেই যশোরের বিভিন্ন অঞ্চলের গাছিরা খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে

যশোরের যশ খেজুরের রস” শুধু কথায় বা প্রবাদে নয়, কাজেও প্রমাণিত। শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। তাই প্রতি বছরের মতো এবারো যশোরের ঝিকরগাছা, বেনাপোলের, বাকড়া, শার্শা, খাজুরা ও বিভিন্ন গ্রামের গাছিরা খেজুরের রস আহরণের জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন। গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস বের করার জন্য শুরু করেছেন প্রাথমিক পরিচর্যা। স্থানীয় ভাষায় এটাকে গাছ তোলা বলে। এক সপ্তাহ পরই আবার চাছ দিয়ে নলি ও গুজা লাগানো হবে রস আহরণের জন্য। খেজুর গাছ থেকে রস বের করতে তিন স্তর পেরিয়ে পক্ষকাল পরেই রস আহরণ শুরু হয়। গ্রাম বাংলায় এখন চোখে পড়ছে খেজুর গাছ তোলা চাছার দৃশ্য। গাছিরা এখন মাঠে মাঠে মহা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

কিছুদিন পরই গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষ থেকে সুমধুর রস বের করে গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে নতুন গুড়, পাটালি তৈরির উৎসব। গ্রামে গ্রামে খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা, পায়েস, মুড়ি মুড়কি ও নানা রকমের মুখরোচক খাবার তৈরির করার ধুম পড়বে। আর রসে ভেজা কাচি পোড়া পিঠার (চিতই পিঠা) স্বাদই আলাদা। নলেন গুড়, ঝোলা গুড় ও দানা গুড়ের সুমিষ্ট গন্ধেই যেন অর্ধ ভোজন। রসনা তৃপ্তিতে এর জুড়ি নেই। নলেন গুড় পাটালির মধ্যে নারিকেল কোরা, তিল ভাজা মিশালে আরো সুস্বাদু লাগে।

বেনাপোলের মাটিপুকুরিয়া চাষি বলেন , প্রতিটি গাছ তোলা ৮০ টাকা, আগাম গাছ তোলায় লাভ বেশী তাই আমি প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০টি গাছ তুলছি। উপার্যনও ভাল হচ্ছে। খেজুর গাছ চাষী শার্শার টুটুল উদ্দিন বলেন, আগাম রস ও গুড়ে দাম ভাল পাওয়া যায়। লাভও হয় বেশী তাই তিনি আগাম গাছ কাটাচ্ছেন।

যশোর অঞ্চলের রস দিয়ে তৈরি গুড়ের সুনাম রয়েছে দেশ বিদেশে। এই গুড় দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিশ্বের অনেক দেশেই রপ্তানি হয়। এলাকাবাসী মনে করেন এই গুড় রপ্তানিতে যদি সরকারী কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় তবে এই ব্যবসাটাও বিশ্বর কাছে দেশের ভাবমূর্তি অনেক অংশে বৃদ্ধি করবে।