সাংবাদিকতায় মাস্টার্স করে ফুটপাতে ফল বিক্রি করছেন সোহাগ!

সাংবাদিকতায় মাস্টার্স শেষ করে এখন ফুটপাতে ফল বিক্রি করছে পলাশবাড়ী পৌর এলাকার মোঃ আক্তারুজ্জামান সোহাগ।তবে অভাবে পড়ে এমন পেশা বেছে নেয়নি সে। নিতান্তই শখের বশে ও রমজান মাসে অবসর সময়টাকে কাজে লাগাতে পলাশবাড়ি পৌর বাজারে ফুটপাতে ফল বিক্রি শুরু করেন তিনি। এতেই তার সমালোচনা শুরু করেন বন্ধু-বান্ধবসহ কাছের আত্মীয়-স্বজন। আর সমালোচকদের সমালোচনার জবাব দিতে সম্প্রতি তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন তিনি। মুহূর্তের মধ্যে পোস্টটি ফেসবুকে ব্যাপক সাড়া পায়।

পাঠকদের জন্য তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

জ্বি, আমি ফল বিক্রেতা। পলাশবাড়ী পৌরসভা বাজারে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ফল বিক্রি করি। এই যে পেছনে বহুতল বাণিজ্যিক ভবনটি দেখছেন সেটার মালিকও আমি। গত এক বছর এই ভবনটিতে শ্রমিকের কাজ করেছি। ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে সমাধানও দিয়েছি। তার মানে ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে জ্ঞানও কিছুটা আছে।

এই শহরে আমার বহু ছাত্র আছে। পলাশবাড়ী সরকারি এসএম পাইলট মডেল হাইস্কুলে দুই বছর শিক্ষকতা করেছি। ভালো পড়াতে পারি বলে একটা সুনাম শোনা যায়। এ ছাড়া ২-১টি সরকারি চাকরিতে ভাইভা দেওয়ার অভিজ্ঞতাও আছে।

‘যুব-জাগরণ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন’ নামে পলাশবাড়ীতে আমার একটি সামাজিক সংগঠন রয়েছে। বনায়ন, স্বেচ্ছায় রক্তদানসহ বেশ কিছু বিষয়ে ৩০০০ জনের একটি ইউনিট কাজ করে থাকে। ইউএনও স্যার আমাদের প্রধান পরামর্শক। স্যারকে নিয়েই কাজ করি।

সরকার, রাজনীতি, বিশ্ব-রাজনীতি এগুলো নিয়ে লেখালিখি করি তারও একটা কারণ আছে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা থেকে প্রথম শ্রেণিতে এমএসএস করেছি। ২-৩ বছর স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছি। একটা সময় রেডিসন, শেরাটন, সোনারগাঁওয়ে ইফতার করতাম। মন্ত্রী, আমলাসহ সম্মানিত অনেককেই সরাসরি প্রশ্ন করেও ফেলতাম। তারা উত্তর দিতে এক প্রকার বাধ্যই ছিল। তাদের সঙ্গে বসতাম, কাজ করতাম, ভালোবাসার সম্পর্ক হতো।

যারা আজ আমার ফুটপাতে ব্যবসা নিয়ে তিক্ততা সৃষ্টি করছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ভাই-বোন এ জীবনে আমার আরও বহু কিছু করার ইচ্ছা আছে…বহু কিছু…এতে করে কেউ যদি পরিচয় দিতে সংকোচ বোধ করেন তাহলে এড়িয়ে যান

উল্লেখ্য আখতারুজ্জামান সোহাগ ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতায় মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। তিনি কালের কণ্ঠ ও বাংলা নিউজসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে সাংবাদিকতাও করেছেন কয়েক বছর।