স্ত্রীকে হত্যার পর লবণ মাখা লাশ কম্বলে মুড়িয়ে হাসপাতালে!

নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার রাজবাড়ি এলাকায় শান্তা (২৫) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার পর শরীরে লবণ মেখে লাশ কম্বলে মুড়িয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী শিক্ষক আমিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, স্ত্রীকে হত্যার পর শরীরে লবণ মেখে কম্বল মুড়িয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দিতে গিয়ে ধরা পড়েন আমিরুল ইসলাম। পরে মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত আমিরুল ইসলাম উপজেলার রাজবাড়ি এলাকার সুলতান মিয়ার ভাড়াটিয়া রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি বন্দর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে গণিত বিষয়ে শিক্ষকতা করেন। তার স্ত্রী নিহত শান্তা সোনারগাঁও উপজেলার বারদি এলাকার কলিমুল্লার মেয়ে।

ঘটনাস্থলে যাওয়া বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক সবুর জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত শান্তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফখরুদ্দিন ভূঁইয়া জানান, বন্দর গার্লস স্কুলের গণিত বিষয়ের শিক্ষক মো. আমিনুল ইসলাম তার স্ত্রীকে হত্যা করে শরীরে লবণ মেখে কম্বল পেঁচিয়ে লাশ বাসায় রেখে দেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে মঙ্গলবার দুপুরে স্ত্রীর লাশ নিজেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক মরদেহের মাথায় আঘাতের চিহ্ন দেখেন এবং কমপক্ষে দুই থেকে তিন দিন আগে মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করেন। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ জরুরি বিভাগে রেখে স্বামী আমিনুল ইসলামকে আটক করে থানায় খবর দেন। এ সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পরে লাশ উদ্ধার করে সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য সদরের জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ওসি আরও বলেন, কি কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তার রহস্য উদঘাটনে নিহতের স্বামী আমিনুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহের কারণে স্ত্রীকে হত্যার কথা তিনি স্বীকার করেছেন। তবে অন্য কোনো কারণ বা ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছেন কিনা তা আমরা খতিয়ে দেখছি।

এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান তিনি।