১১ বছর পর বিপিএলে মিলার

অনেক আগেই জানা গিয়েছিল ফরচুন বরিশালের হয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এবারের আসরে খেলতে চলেছেন ডেভিড মিলার। তবে কবে তিনি দলের সঙ্গে যোগ দেবেন না নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা। মাঝে মিলারের বিয়ের খবরের কারণে অনেকে মনে করছিলেন যে বিপিএলে আসা হচ্ছে না এই প্রোটিয়া তারকার। অবশেষে প্লে অফের আগে বরিশালের হয়ে খেলতে এসেছেন মিলার। সব কিছু ঠিক থাকলে আজ সোমবার চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে এলিমিনেটর ম্যাচে বরিশালের জার্সিতে মাঠে নামবেন মিলার।

বিপিএলে আগেও খেলেছেন তিনি। তবে সেটি ১১ বছর আগে। তখন তিনি ছিলেন সম্ভাবনাময় এক তরুণ। এখন অনেক পরিণত একজন। ২০১৩ বিপিএলে চিটাগং কিংসের হয়ে তিনটি ম্যাচ খেলে গিয়েছিলেন তরুণ বয়সের মিলার। তখন অবশ্য ঠিক মিলার হয়ে ওঠেননি তিনি। ওই তিন ম্যাচে সাকুল্যে ৪১ রান করেন মিলার। স্ট্রাইক রেট ছিল একশর নিচে। ভুলে যাওয়ার মতো স্মৃতিই বটে! তবে এত বছর পর ফিরে মিলার জানালেন, ওই আসরের অভিজ্ঞতা বেশ ভালোভাবেই মনে আছে তার।

তিনি জানান, আমার মনে হয়, সেবার চিটাগং কিংসে খেলেছিলাম। মনে আছে, জার্সিটি একটু বেশিই গোলাপি ছিল। মাত্র এক সপ্তাহের জন্য এসেছিলাম এখানে। তিনটি ম্যাচ খেলেছিলাম। বাংলাদেশ নিয়ে আমার ভালো স্মৃতিই আছে।

 

ওই বিপিএলের মাস দুয়েক পরের আইপিএল দিয়ে শুরু মিলারের উত্থান। কিংস এলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে ৩৭ বলে সেঞ্চুরি করেন তিনি। এরপর ধীরে ধীরে নিজেকে পরিণত করেন টি-টোয়েন্টির বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান হিসেবে। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ক্রমেই ক্রিকেট বিশ্বে পরিচিতি পেয়ে যান ‘কিলার মিলার’ নামে।

সময়ের সঙ্গে তার ব্যাটিংও নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে। একটা সময় তার কাছে আক্রমণই ছিল শেষ কথা। সময়ের সঙ্গে পরিণত হয়েছেন। পরিস্থিতির দাবি মেটাতে শিখেছেন আরও ভালো করে। আগের চেয়ে অনেক বেশি গোছানো ব্যাটিং করতে দেখা যায় তাকে। তার ব্যাটের ধার তাতে কমেনি, বরং বেড়েছে কার্যকারিতা।

বয়স ত্রিশ পেরোনোর আগে ৭০টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১৪০.৩২ স্ট্রাইক রেট ও ৩০.০২ গড়ে ১ হাজার ২৯১ রান করেন মিলার। পরের পায় পাঁচ বছরে ৪৬ ম্যাচে তিনি ৯৭৭ রান করেন ৪০.৭০ গড় ও ১৫০.৫৩ স্ট্রাইক রেটে। মিলার নিজেই বললেই, সময় ও অভিজ্ঞতায় আরও ঋদ্ধ হয়ে উঠেছেন তিনি।

তিনি বলেন, আমি জানি না, এখানে কারও পানের অভ্যাস আছে কি না। বলা হয়ে থাকে, সময় যত যায়, রেড ওয়াইন ততই সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। যখন আপনার বয়স বাড়বে, আরও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, অতীত থেকে শিখবেন। অনেক ক্রিকেটারের মতো আমরা কেউই খেলাটা সম্পূর্ণভাবে বুঝি না। সবসময়ই শেখার মধ্যে থাকতে হবে। কঠিন পরিশ্রম করতে হবে এবং যতটুকু সম্ভব শিখতে হবে।

মিলারকে অবশ্য এবার দুই ম্যাচের বেশি পাবে না বরিশাল। চলতি মাসের শেষ দিন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার কথা ৩৪ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের। তাই এলিমিনেটর জিতলে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার পর্যন্তই থাকতে পারবেন তিনি। বিপিএলের আগে মিলার সবশেষ খেলেছেন নিজ দেশের এসএ টি-টোয়েন্টি লিগে। এরপর বিয়ের ব্যস্ততায় গত আড়াই সপ্তাহের বেশি সময় ক্রিকেট থেকে কিছুটা বিচ্ছিন্নই ছিলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

মিলার বলেন, সত্যি কথা বলতে, কোনো ক্রিকেট দেখিনি। বিরতি নিয়েছিলাম। দ্রুতই বিয়ে করতে চলেছি। অনেক কিছুর দেখভাল করতে হচ্ছে। তবে ফোনে ক্রিকইনফোতে (ক্রিকেট ওয়েবসাইট) চোখ রেখেছি, যাতে করে পয়েন্ট টেবিলের ব্যাপারে ধারণা রাখতে পারি যে, তাদের (বরিশাল) কী অবস্থা। তবে টিভিতে কোনো ম্যাচ দেখিনি।