পটুয়াখালীর গলাচিপায় ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মেলা অনুষ্ঠিত

পটুয়াখালী গলাচিপায় তেতুলীয়া নদীর তীরে ২০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মাঘি সপ্তমী মেলা হাজার হাজার দর্শনার্থীদের কোলাহলপূর্ণ উৎসব মুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৮ জানুয়ারী) পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার সুতাবাড়ীয়া ইউনিয়নে মাঘের সপ্তমী তিথিতে দয়াময়ী মন্দির প্রাঙ্গনে ভোর ৬ টা থেকে কালী পুজা ও শিব পুজার মধ্য দিয়ে এ মেলার কার্যক্রম শুরু হয়। ভোর থেকে সন্ধা পর্যন্ত ঢাক-ঢোল, শঙ্খ সহ বিভিন্ন বাদ্য-বাজনা ও দর্শনার্থীদের কলরবে মুখরিত ছিল মেলা প্রাঙ্গন। মেলায় অনেক শিশুর বাৎসরিক মাথা মুন্ডন করা হয়।

এছাড়া মেলার কালী মন্দিরে পাঠা বলিদান হয়। মেলায় রঙ বেরঙের আকর্ষণীয় বিভিন্ন খেলনার দোকান, পল্লী বাসীদের স্ব হস্তে তৈরিকৃত বুনন শিল্পের সামগ্রী, গৃহস্থলীর ব্যবহার্য তৈজস পত্রের পণ্য সামগ্রী, মাটির তৈরি বাসন-কোসনের হরেক রকম দোকান, মিষ্টি সামগ্রীর দোকান, খাবারের দোকানের পসরা বসে।

এক সময় প্রতি বছর বাংলা মাঘ মাসের ১ তারিখে মন্দির এলাকায় এক মাসব্যাপী মেলা বসত। এই মন্দিরে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসতেন অনেক ভক্ত। জমজমাট থাকত সারা গ্রাম। শীত মৌসুমে লোক সমাগম হতো অনেক বেশি। কলকাতা থেকে নামী যাত্রাদল এসে এ জনপদকে মাতিয়ে রাখত। বিভিন্ন এলাকার সাধু-সন্ন্যাসীরা এসে ভিড় জমাতেন।

সময়ের আবর্তে ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মেলা এখন মাত্র ১ দিন অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ে জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় এ দয়াময়ী দেবীর মন্দিরটি দাঁড়িয়ে আছে। নদী ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে পাঠা বলির ঘর, কালী মন্দির, শিব মন্দির ও একমাত্র দিঘিটি।

মেলাটি এ অঞ্চলের হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি তথা বিশেষ ভাবে শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীদের কাছে বিপুল আনন্দের খোরাক।