ইমামকে মারধর, কনের বিয়ে পড়াতে রাজি না হওয়ায়

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে অপ্রাপ্ত বয়সে কনের বিয়ে পড়াতে রাজি না হওয়ায় মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কালাম আজাদকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছেন কনের চাচা দুলাল।

শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নে ঘটনাটি ঘটে। মানসম্মান নষ্ট হবে এমন ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখেন মসজিদের ওই ইমাম।
শনিবার (৯ জানুয়ারি) মারধরের পর ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে উল্টো থানায় আগাম অভিযোগ করেছেন দুলাল।

জানা গেছে, ফরিদগঞ্জে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গণশিক্ষা বিভাগের শিক্ষক ও স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম হচ্ছেন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।

আর তাকে মারধর করেছেন পাইকপাড়া মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি, পুলিশ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান দুলাল (৫০)। তিনি নিজেকে ডিএমপির অধীনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা বিভাগে কর্মরত আছেন বলেও দাবি করেন।

ঘটনার বিবরণে ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার মোস্তাফিজুর রহমান দুলালের ভাই জাহাঙ্গীর হোসেনের মেয়ের বিয়েতে স্থানীয় মসজিদের ইমাম আবুল কালাম আজাদকে বিয়ে পড়াতে দাওয়াত দেওয়া হয়। দাওয়াতে এসে ইমাম বিয়ে পড়ানো আগে জানতে পারেন মেয়ের বয়স কম। তাই বিয়ে পড়াতে অস্বীকৃতি জানান। এই বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ইমামকে বেদম মারধর করে আহত করেন কনে চাচা।

মারধরের কারণ জানতে মসজিদের বেশকিছু মুসল্লি দুলালের বাড়ির সামনে যায়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে দুলাল ও তার বাড়ির লোকজনের অতর্কিত হামলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আহমেদ (৬৫), মাওলানা আবু জাফর (৫৫), গোলাম কিবরিয়া (৫০), শাহাদাৎ হোসেন (৪৫), নেছার পাঠানসহ বেশ কয়েকজন মুসল্লি আহত হন।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মসজিদ কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হক বলেন, ‘পুলিশে চাকরি করা দুলাল এবং তার ভাইয়েরা বরাবরই উগ্র। দুলাল নিজেকে পুলিশের লোক পরিচয় দিয়ে এলাকার মানুষকে শাসিয়ে বেড়ায়। গত শুক্রবার ইমাম, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েকজনকে মারধর করে উল্টো আবার থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় গ্রহণ করব।

এ বিষয়ে জানতে গেলে দুলালের ভাই জাহাঙ্গীর স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে বলেন, আপনারা আমাদের কোনো বিষয়ে ছবি বা তথ্য নিতে পারবেন না। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপহরণ চেষ্টা এবং চাঁদাবাজির অপবাদ দেন।

এ বিষয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী মো. শাহ্ আলম বলেন, আমি নিকাহ রেজিস্ট্রেশন করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কনে অপ্রাপ্ত বয়সের হওয়ায় নিকাহ্ রেজিস্ট্রেশন না করে চলে এসেছি।

এ বিষয় ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, ঘটনার বিষয় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।