ক্যাফেটেরিয়া নিয়ে নানা সংকটে কুবির শিক্ষার্থীরা

দীর্ঘ বন্ধের পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া খুললেও এখনো গুছিয়ে উঠতে পারেনি। শিক্ষার্থীদের ওয়াশরুমের জরাজীর্ণ অবস্থা, সুপেয় পানির অভাব, গরমের মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা না থাকা, খাবারের উচ্চমূল্য সহ নানা সমস্যায় ভোগান্তিতে পড়ছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়াতে খাবারের মূল্য তালিকার সাথে আশেপাশের হোটেলগুলোর মূল্য তালিকার খুব একটা পার্থক্য নেই। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া থেকে খেয়ে শিক্ষার্থীদের আর্থিক কোনো সুবিধা হচ্ছে না।

এই বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালেয়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় পাল অর্জুন বলেন – ক্লাস শেষে অবসাদগ্রস্ত হয়ে যখন দুপুরের খাবার গ্রহণ করতে ক্যাফেটেরিয়াতে যায় তখন সুদীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে একমুঠো ভাতের জন্য অপেক্ষা করতে হয়, কারণ সেখানে পর্যাপ্ত জনবল নেই। বেসিনে হাত ধোয়ার জন্য অনেকসময় থাকেনা পর্যাপ্ত পানি, নেই পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা।
আবার যেখানে বসে খাবার গ্রহণ করতে হয়, সেই টেবিলটাও পরিষ্কার থাকে না, হাজার বার বলেও ক্যাফেতে পরিষ্কার কর্মী দ্বারা পরিষ্কার করা যায় না, কারন সেখানেও পর্যাপ্ত জনবলের অভাব। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুকি থেকেই যাচ্ছে।
প্রশাসনের সুষ্ঠ পদক্ষেপ কামনা করছি।

আবার করোনার দীর্ঘ বন্ধে ক্যাফেটেরিয়াটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় নিয়ােজিত আনসারদের সাময়িক আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ যার প্রভাব পড়েছে ক্যাফেটেরিয়ার সামগ্রিক পরিবেশে৷ সেসময়ে ক্যাফেটেরিয়ার শিক্ষার্থীদের দুইটি ওয়াশরুম, হাত ধোঁয়ার বেসিনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যা এখনো ঠিক করা হয়নি।

ক্যাফেটেরিয়ার ওয়াশরুম ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন এখানে খেতে আসা নারী শিক্ষার্থীরা। এই বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে শিক্ষার্থী জান্নাতুন নিসা জানায়- ক্যাফেটেরিয়াতে খাবার খেতে গেলে ফ্রেশ হওয়ার মতো কোনো যায়গা নেই, এখানে যদি ওয়াশরুম থাকতো তাহলে এই গরমের দিনে আমরা একটু ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে পারতাম। এছাড়াও পর্যাপ্ত ফ্যান না থাকাতে এই গরমের সময়ে দুপুরের খাবার খেতে অনেক অসুবিধা হয়।

এদিকে ফিল্টার বা সুপেয় পানির ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীদের সরাসরি বেসিনের পানি পান করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। এছাড়া গরম পড়তে শুরু করায় নষ্ট ও পর্যাপ্ত ফ্যান নিয়েও অভিযোগ রয়েছে তাদের।

তবে এ বিষয়ে ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মান্নু মজুমদার বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে মাছ-মাংস, তেল-পেয়াজ সবজিসহ সকল কিছুই বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে আবেদন করাছি ১৫ টি ফ্যান ও ২ টি ওয়াশরুম এবং লাইট দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এই বিষয়ে বলেন – ‘ক্যাফেটেরিয়ার সমস্যা সমাধানের জন্য আলাদা কমিটি আছে। তাদের কাছে শিক্ষার্থীদের করা অভিযোগ উত্থাপন করবো এবং যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো।’