গালিগালাজ সহ্য করতে না পেরে বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করল মেয়ে

বাবা গালিগালাজ করতেন, প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে নাকি মারধরও করতেন। এসব সহ্য করতে না পেরে রাগের মাথায় বাবাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল মেয়ের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি ভারতের হুগলির উত্তরপাড়ার ভদ্রকালীর কবি কিরণধন রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রতিবেশীদের বয়ানের ভিত্তিতে মেয়েকে আটক করেছে পুলিশ। তবে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় তদন্ত শুরু হয়নি।

নিহত ব্যক্তির নাম কালীপদ দাস। ভদ্রকালীর কবি কিরণধন রোডের এই বাসিন্দা রেলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। বাড়িতে স্ত্রী গীতাদেবী অসুস্থ, শয্যাশায়ী। মেয়ে কেয়া অধিকারী তালাকপ্রাপ্ত। বাবার বাড়িতেই থাকেন ছেলে অভিষেককে নিয়ে। বছর চব্বিশের নাতি অভিষেকের পড়াশোনা-সহ যাবতীয় খরচ এতদিন বহন করেছেন কালীপদ বাবুই।

প্রতিবেশীরা জানান, বেলা ১১টার দিকে এই বাড়ি থেকে বৃদ্ধের চিৎকার শোনা যায়। আশপাশের বাসিন্দারা ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করেন। দেখা যায়, অভিষেক দুটি ব্যাগ নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে। তা দেখার পরই সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। তারা বৃদ্ধের বাড়ি গিয়ে দেখেন, তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।

স্থানীয় এক চিকিৎসককে খবর দেন প্রতিবেশীরা। তিনি এসে পরীক্ষা করে জানান, বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেশীদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে মেয়ে ও নাতির ওপর। উত্তরপাড়া থানায় খবর পাঠানো হয়। পুলিশ ওই বাড়িতে পৌঁছে মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় মেয়ে কেয়া জানিয়েছে, তার সঙ্গে বাবার অশান্তি লেগে থাকত। মেয়েকে গালিগালাজ, এমনকি মারধরও করতেন বাবা। এদিনও তেমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বাড়িতে। তাতেই কেয়া রেগে বাবাকে পেটায়। তবে তাতে যে বাবার মৃত্যু হবে, তা নাকি ভাবতে পারেননি অভিযুক্ত মেয়ে। এই স্বীকারোক্তির পর মেয়ে কেয়া অধিকারীকে আটক করে পুলিশ। খোঁজ চলছে, নাতি অভিষেক অধিকারীর।

প্রতিবেশীরা জানান, কালীপদ বাবুই মেয়ের ডিভোর্সের পর মেয়ে-নাতিকে নিজের বাড়িতে এনে রাখেন। তাদের দেখভালের দায়িত্ব নেন। অভিষেককে বড় করে তুলেছেন তার নানা। তাই সম্পত্তিগত কারণে পরিকল্পনা করেই কেয়া বাবাকে পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ প্রতিবেশীদের। আর এই ঘটনায় মাকে সাহায্য করেছে নাতিও। এমনই অভিযোগ তাদের।