চুল-পোশাক সমেত মালিককেই খেয়ে নিল কুকুরগুলো!

‘কুকুর প্রভুভক্ত’ এ কথা সবাই জানে। এমনকি প্রভুকে বাঁচতে কুকুর তার জীবন পর্যন্ত উৎসর্গ করে। এমন উদাহরণ রয়েছে অনেক। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ভেনাসে যা ঘটল তা শুনেও গা শিউরে ওঠে।

ভেনাস এলাকা একটি বাড়িতে ৫৭ বছর বয়সী ফ্রেডি ম্যাককে চুল ও পরিধানের কাপড়সহ খেয়ে ফেলল তার নিজের পোষা ১৮টি কুকুর। কিন্তু অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যাওয়ার পরে তাকে কুকুরেরা খেয়ে ফেলে নাকি কুকুরেরাই ম্যাককে মেরে ফেলে সেই বিষয়টা স্পষ্ট নয় স্থানীয় জনসন কাউন্টি শেরিফ অ্যাডাম কিং।

এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্রেডি ম্যাক টেক্সাসের ভেনাসের কাছে তার নিজের গ্রামের বাড়িতে ভালোবেসে ১৮টা কুকুর পুষেছিলেন। এই ১৮ কুকুরই ছিল তার একমাত্র সঙ্গী। সেই কুকুরের পেটেই ঠাঁই হয়েছে শেষমেশ। বিশ্বাস করতে অবাক লাগলেও আস্ত একটা মানুষকে খেয়ে ফেলেছে তার পোষা কুকুরেরাই! ম্যাকের চুল, পোশাক সমেত সবটা আসলে খেয়ে ফেলেছে একদল কুকুর। ম্যাক নিজের একমাত্র সঙ্গী ১৮টা কুকুরের পেটেই মিশে গিয়েছেন হাড় মাংস, চর্বি সমেত।

জনসন কাউন্টি শেরিফ অ্যাডাম কিং ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, আমরা একেবারে বিশ্বাস করতে পারিনি। কারণ কিছুই বাকি ছিল না আর। যদিও প্রাণিরা যে মানুষের অবশিষ্টাংশ খেয়ে ফেলবে এটা বিস্ময়কর হলেও সাধারণ। কিন্তু, তা বলে পুরো শরীর, জামাকাপড় এবং সবটুকু?

সিনিয়র তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, কুকুর একটা গোটা মানুষ খেয়ে ফেলেছে এমনটা তারা আগে শোনেননি। তবে তারা চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত হন মঙ্গলবার। গোয়েন্দারা জানতে পারেন, যে সামান্য অংশ পাওয়া গিয়েছে মেডিকেল পরীক্ষায় তা ম্যাকের বলেই চিহ্নিত হয়েছে।

অ্যাডাম গণমাধ্যমকে আরও বলেন, ৫৭ বছর বয়সী ম্যাক অসুস্থ ছিলেন বেশ। অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যাওয়ার পরে তাকে কুকুরেরা খেয়ে ফেলে নাকি কুকুরেরাই তাকে মেরে ফেলে সেই বিষয়টা স্পষ্ট নয়।

জনসন কাউন্টি শেরিফ অফিসের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানায়, সাধারণত কারো সঙ্গেই তেমন যোগাযোগ রাখতেন না ম্যাক। বেশ কিছুদিন তার খবর না পাওয়ায় তার পরিবারের একজন সদস্য শেরিফ অফিসে যোগাযোগ করেন। ম্যাকের খোঁজ না পেয়ে তার বাড়িতেও আসেন পরিবারের সদস্যরা।

অ্যাডাম কিং বলেন, ওই কুকুরগুলি এতখানিই হিংস্র যে কাউকেই কাছে ঘেঁষতে দেয়নি। ড্রোন উড়িয়েও বাড়ির ভেতরে দেখার চেষ্টা করা হয়, তাও ম্যাকের সন্ধান মেলে না। কোনো রকমভাবেই কোনো যোগাযোগ না করতে পেরে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ম্যাকের জন্য সন্ধান চালানো হয়।

তিনি বলেন, ওই বাড়িতে অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে প্রথম একটুকরো হাড় মেলে। পরে আরও বেশ কয়েকটা হাড়ের টুকরো মেলে ম্যাকের ওই বাড়ি থেকে। কুকুরগুলিকে আটক করে আরও তল্লাশি চালালে কর্তৃপক্ষ চুল, আরও হাড় এবং ম্যাকের পোশাকের ছেঁড়া টুকরো আবিষ্কার করে। কুকুরেরা যেখানে থাকত সেখানে ম্যাকের দুপাটি জুতোও মেলে।

ম্যাকের এই পোষা কুকুরগুলো ভয়ানক হিংসাত্মক প্রকৃতির। পরে ১৩টি কুকুরকে মেরে ফেলা হয়েছে। অন্য কুকুরেরা মিলে তার আগেই নিজেদের দুই কুকুরকেও মেরে ফেলে। ৩টি একটু নরম হওয়ায় রক্ষা পেয়েছে বলে জানান অ্যাডাম।