যশোরে

টাকার অভাবে অন্তসত্বা মেয়ের সিজার করাতে পারছেন না অসহায় পিতা!

মেজো মেয়ে সোনিয়া ১০ মাসের গর্ভবতী। বুধবার ছিলো ডাক্তার বাড়ী যাওয়ার কথা। ডাক্তারের সাফ কথা- নরমালে প্রসব হবে না, সিজারিয়ান অপারেশন করা লাগবে। টাকার অভাবে ডাক্তরের কাছেও বাকি রয়েছে। আগেই ১৩শ’ টাকা পাবেন ডাক্তার। এবার সব মিলিয়ে খরচ পড়বে ১২ হাজার টাকার মতো। বাড়ীতে বাড়তি কোন টাকাও নেই। তাই মাথায় হাত দিয়ে উঠানে ঠায় বসে সোনিয়ার অসহায় পিতা। চিন্তার ছাপ তার চোখে মুখে।

যশোরের শার্শা উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের ফজলুর রহমান মিয়ার সংসারের অবস্থা এ রকমই।

বয়স ৬০ পেরিয়েছে ফজলু মিয়ার। শারীরিক দুর্বলতার কারণে কাজে অক্ষম তিনি। একদিন কাজ করলে ১ সপ্তাহ বসে কাটাতে হয়। সংসারে অভাবই কাটে না।

বাঁশ বাগানের তলায় দু’শতক জমির ওপর ছোট একটা ঘর ফজলু মিয়ার। টালির ছাউনি বেড়া দিয়ে ঘেরা। পাশে ছোট্ট রান্না ঘর। এই মাত্র সম্বল তাদের।

সরকারী অনুদান বলতে এ বছর দশ টাকা দরে চালের একখান কার্ড আছে তাদের।

স্ত্রী রাবেয়া ও ৪ মেয়ে নিয়ে ফজলুর রহমানের সংসার। বড় মেয়ে হালিমা আগের পক্ষের। থাকে শশুর বাড়ী। এ পক্ষের সোনিয়া, আছিয়া, রাজিয়াসহ তিন মেয়ে। কোন ছেলে নেই তাদের।

মেজো মেয়ে সোনিয়ার বিয়ে হয়েছে বছর খানিক হলো। তার স্বামী ও শশুর বাড়ির অর্থনৈতিক অবস্থাও খারাপ। প্রথম সন্তান হবে বলে রয়েছেন পিতার বাড়িতে। এখন ১০ মাসের অন্তসত্বা সে।

আরেক মেয়ে আছিয়ার বিয়ে হয়েছে মনিরামপুর থানার লাউড়ী গ্রামে। তার মেয়ের বয়স ১ বছর দু’ মাস। আছিয়ার মেয়ে জন্ম থেকে প্রতিবন্ধি। বাপের বাড়ী এসেছে বাচ্চাটির চিকিৎসা করাতে। গত শবেবরাতের পরে শশুর বাড়ী থেকে বাপের বাড়ী এসেছিলেন আছিয়া। শশুর বাড়ী যায়নি এখনো।
ছোট মেয়ে রাজিয়া ক্লাস সিক্সে পড়ে।

এই ৩ মেয়ে নিয়ে লকডাউনের বাজারে হিমশিম খাচ্ছেন ফজলু। এ কারণে অভাবের সংসারে অশান্তি লেগেই থাকে। বকাঝকার মধ্যেই দিন কাটে স্বামী-স্ত্রীর।

ফজলু মিয়ার স্ত্রী রাবিয়া এখন সংসারের হর্তা কর্তা। এই বাড়িতে সেই বাড়িতে কাজ করে। আর চেয়ে চিন্তে দিন পার করেন কোন রকমে। বাড়ি ফিরে যত রাগ দেখান তার স্বামীর ওপর।

অসহায় এই পরিবারটি এখন সংসার চালানোর চিন্তা বাদ রেখে মেয়ের ডেলিভারি করানোর চিন্তায় বিভোর। এখন তার সাহায্যের খুবই প্রয়োজন। এ মুহুর্তে বিত্তবানরা সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসলে নিষ্পাপ সুন্দর একটি ফুটফুটে শিশু পৃথিবীর আলো দেখতে পারে।

কেউ সাহায্য দিতে চাইলে 01908-221530 নাাম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন। দানের উছিলায় করেনার মত মহামারী থেকে হয়তো রেহাই দিতে পারে সৃষ্টিকর্তা।