ড্রেসিংরুম থেকে ধর্ষণের ভিডিও করে বিল্লাল

বনানীর রেইনট্রি হোটেলে সেই রাতে সাফাত আহমেদ নিজেই বিল্লালকে উপরের রুমে ডেকে নেন। এসময় সাফাত আহমেদ তাকে (বিল্লাল) বাথরুম সংলগ্ন ড্রেসিং রুমে গিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চিত্র ভিডিও করতে বলেন।

সাফাত এবং তার বন্ধু পলাতক নাঈম আশরাফ (প্রকৃত নাম আবদুল হালিম) যখন দুই তরুণীকে ধর্ষণ করেন, তখন পুরো দৃশ্য সে (বিল্লাল) মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিল। পরে এ ঘটনায় মামলা দায়ের ও মিডিয়ায় একের পর এক খবর ছাপা হতে থাকলে সাফাতের নির্দেশেই তিনি (বিল্লাল) ওই ভিডিও ডিলিট করে দেন।

দুই তরুণীকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ ও তার গাড়িচালক বিল্লালকে সোমবার রাতে কিছু সময়ের জন্য মুখোমুখি করেছিলেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। তখন এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিল্লালের কাছে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিল্লাল এসব তথ্য জানান।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ঘটনার রাতে অস্ত্র নিয়েই হোটেলটিতে (দ্য রেইনট্রি) প্রবেশ করেছিলেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন সাফাতের বডিগার্ড রহমত আলী। পুলিশ ইতিমধ্যেই গাড়িচালক বিল্লালের ওই মোবাইল ফোনটি জব্দ করেছে। একই সঙ্গে ডিলেট করা ওই ভিডিও পুনরুদ্ধারের জন্য তদন্ত সংশ্লিষ্টরা সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পাঠিয়েছে।

গত রবিবার ধর্ষণের আগে ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করে সাফাত আহমেদ গোয়েন্দাদের জানিয়েছিল, অভিযোগকারী দুই ছাত্রীর সঙ্গে আসা শাহরিয়ার নামে এক চিকিৎসককে মারধরের দৃশ্য তারা ভিডিও করেছে। আর ধর্ষণ করার আগে গাড়ি চালক বিল্লাল হোসেন ওই দুই ছাত্রীর সঙ্গে তাদের ওঠাবসার দৃশ্য ভিডিও করেছেন। তবে এর বাইরে ধর্ষণ করার সময় সেই দৃশ্য গাড়িচালক ভিডিও করেছে কি না তার জানা নেই।

যদিও রেইনট্রি হোলেটের ৭০১ নম্বর কক্ষে মোবাইল ফোনে ভিডিও করার দৃশ্য এখনও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি।

এর আগে সোমবার রাতে রাজধানীর নবাবপুর রোডের ইব্রাহীম আবাসিক হোটেল থেকে গাড়িচালক বিল্লালকে গ্রেফতার করে র্যাব-১০ এর একটি দল।

প্রসঙ্গত, ২৮ মার্চ বন্ধুর সঙ্গে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে গিয়ে বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণী। ওই ঘটনায় ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ (সিরাজগঞ্জের আবদুল হালিম) ও সাদমান সাকিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তারা।

শুক্রবার তাদের আদালতে হাজির করা হলে সাফাত আহমেদকে ছয় ও সাদমান সাকিফের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। দুই তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় গ্রেফতার সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার ছিল রিমান্ডেও চতুর্থ দিন।