নড়াইলের দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় টিকা পায়নি শিক্ষার্থীরা!

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
লক্ষীপাশা আদর্শ বিদ্যালয়ে অবস্থিত শিক্ষার্থীদের জন্য টিকাদান কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষক হাসানুজ্জামান ও সহকারী শিক্ষক শহীদুল ইসলামের দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীকে টিকা না দিয়ে ফেরত দেওয়ার অভিযোগ করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ শেখ ফারুক আহমেদ।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়ার জন্য লক্ষীপাশা আদর্শ বিদ্যালয়কে টিকা প্রদানকারী কেন্দ্র হিসাবে নির্বাচন করা হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ওই কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রথম দিন ১৫ জানুয়ারি ওই কেন্দ্রে টিকা গ্রহণের জন্য বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গেলে আপ্যায়ন ও এসি খরচ বাবদ প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠনের কাছে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন লক্ষীপাশা আদর্শ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ হাসানুজ্জামান ও সহকারী শিক্ষক শহীদুল ইসলাম। তাদের দাবিকৃত টাকা কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রদান করে টিকা নেয়। কিন্তু লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রথম দিন ওই টাকা না দেওয়ায় বৃহস্পতিবার সকালে প্রধান শিক্ষক হাসানুজ্জামান ও সহকারী শিক্ষক শহীদুল ইসলাম অধ্যক্ষ ফারুক আহমদকে ফোন করে ওই টাকা প্রদানের কথা বলেন। টাকা না দিলে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেওয়া হবে না বলেও জানিয়ে দেয়।

পরে অধ্যক্ষ উক্ত ৫ হাজার টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের বাদপড়া প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীদের টিকা না দিয়ে কেন্দ্র থেকে ফেরত পাঠানো হয়।

এ ব্যাপারে লক্ষীপাশা আদর্শ মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শেখ ফারুক আহমেদ বলেন, টাকা না দেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের টিকা না দিয়ে ফেরত দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি।

লক্ষীপাশা আদর্শ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসানুজ্জামান টাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মৌখিক নির্দেশক্রমে টিকাদান কর্মীদের আপ্যায়ন ও এয়ার কন্ডিশন ক্রয় বাবদ টাকা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে টাকা না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়টি সঠিক নয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া বলেন, আমি কাউকে টাকা নেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশ প্রদান করি নাই। তবে টিকাদানের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ে একটা খরচের বিষয় রয়েছে বলে স্বীকার করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শাহাবুর রহমান জানান, করোনার টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে এসি রুমের প্রয়োজন হয়। এসি ব্যবস্থা থাকায় লক্ষীপাশা আদর্শ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের চাহিদা মোতাবেক শিক্ষার্থীদের জন্য টিকাদান কেন্দ্র করা হয়েছে। তবে করোনা টিকার জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয় না।