পাবনায় দীর্ঘ হচ্ছে ওএমএস’র লাইন! মধ্যবিত্তরাও সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন

পাবনায় মধ্যবিত্তরাও এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। নিত্য পণ্যের বাজারে দাম উর্ধ্বগতি হওয়ায় ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে ওএমএস’র লাইন। লোকলজ্জা ভুলে সংসার খরচ কিছুটা সাশ্রয় করতে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য ক্রয় করছেন। আবার অনেকে নিজ এলাকা থেকে পণ্য না কিনে অন্য এলাকায় গিয়ে ওএমএস’র পণ্য ক্রয় করছেন! লাইনে দাঁড়িয়ে পরিচিত মুখ দেখলেই অনেকেই লুকাচ্ছেন মুখ।

পাবনার চাটমোহর পৌর শহরে ওএমএস’র ৪জন ডিলার রয়েছে। একেকজন ডিলার প্রতিদিন এক হাজার কেজি চাল এবং এক হাজার কেজি আটা দুই’শ জন ব্যক্তির নিকট বিক্রি করছেন। একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল ৩০ টাকা কেজি দরে এবং ৫ কেজি আটা ১৮ টাকা কেজি দরে ক্রয় করতে পারবেন। ভোরবেলা থেকেই স্বল্প ও মধ্য আয়ের বিপুল সংখ্যক নারী পুরুষদের লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য ক্রয়ের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। এ সময় অনেক বৃদ্ধ বয়স্কা নারীর সংখ্যাই ছিল বেশি।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন হলো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হু হু করে বৃদ্ধি পেয়েই যাচ্ছে। পণ্য মুল্যের দাম ক্রমশ বৃদ্ধি পেলেও আয় বাড়েনি স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের। আর এজন্য এই শ্রেণির মানুষের মাঝে বিরাজ করছে নিরব হাতাশা। বাজারে এমন কোন নিত্যপণ্য নেই যে সে পণ্যের দাম কয়েক দফায় বৃদ্ধি পায়নি। সাধারণের ব্যবহার্য নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম হতাশা ও দূর্ভোগ। এক প্রকার বলা যায় বাজারে বেশির ভাগ দ্রব্য মূল্য ক্রেতা সাধারণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। নিম্ন আয়ের মানুষ যা উপার্জন করছে তার পুরোটাই জীবন ধারণের জন্য নূণ্যতম খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ব্যয় করার মতো অর্থ তাদের হাতে অবশিষ্ট থাকছে না।

চাটমোহর পৌর সদরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহকারি শিক্ষক শহিদুল্লা কাওসার জানান, দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিস্বাস উঠেছে। গতকাল বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে গিয়ে আমি রীতিমত অবাক হয়ে গেছি। দিনকে দিন দ্রব্য মূল্য ক্রয় সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে যে সয়াবিন দেড়শ টাকা কেজি কিনেছি এখন দোকানীরা তার দাম চাচ্ছেন ১৭০ টাকা। সাত দিন পূর্বে প্রতি কেস (৩০টি) ডিমের দাম ২৪০ টাকা থাকলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে সংসার চালানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

পৌর সদরের ওএমএস’র ডিলার মো. তিমির খন্দকার জানান, প্রতিদিন আমরা দুই’শ জন মানুষকে ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল এবং ১৮ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি আটা বিক্রি করছি। প্রতিদিন এই দুই রকম পণ্য ক্রয় করতে নিম্ন আয়ের মানুষসহ অনেক মধ্যবিত্ত মানুষও আসছে। প্রতিদিনই নিত্য নতুন মানুষদের দেখা পাচ্ছি আমরা। দুই’শ জন মানুষের মাঝে পণ্য বিক্রি করতে পারলেও চাহিদা আরো অনেক বেশি মানুষের। প্রতিদিনই বাড়ছে পণ্য ক্রয়ের মানুষের সংখ্যা।