পাবনায় পাট ভেজানোর পানি নেই, বিপাকে কৃষকেরা

সোনালী আঁশ পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন পাবনার কৃষকরা। পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না তারা। ভরা বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। অধিকাংশ খাল, বিল, ডোবা ও জলাশয়ে পানি নেই। যেটুকু পানি আছে তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে পাটচাষিরা বৃষ্টির আশায় পাট কেটে জমিতে ফেলে রেখেছেন। আবার কেউ গাড়িতে করে বিল এলাকায় নিয়ে জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন।

চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের কৃষক আকতার হোসেন জানান, এ বছর তিনি ৪ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না। আকতার হোসেনের মতো উপজেলার অধিকাংশ পাটচাষির একই অবস্থা। গত বছর পাটের দাম বেশি পাওয়ায় চলতি বছর পাটের আবাদে ঝুঁকে পড়েন পাবনার কৃষকরা। পাট আবাদ নির্বিঘেœ হলেও এখন পাট কাটা ও জাগ দেওয়া নিয়ে মহা বিপদে পড়েছেন কৃষক।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ এ মাসুমবিল্লাহ জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় আট হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।

ফলনও ভালো হয়েছে। তবে যে বৃষ্টি হয়েছে তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ট নয়। বেশ কিছুদিনের খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে পাট চাষিরা পড়েছেন মহা দুশ্চিন্তায়।
এদিকে আটঘরিয়া উপজেলায় একই অবস্থা। বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় জমিতেই পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। পাট আবাদের শুরুতে আগাম বন্যায় নিচু জমির কিছু পাট তলিয়ে নষ্ট হয়। এখন অনাবৃষ্টি আর টানা খরার কারণে পাট জাগ দেওয়ার পানি পাচ্ছেন না কৃষকেরা।
উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের কৃষক ইদ্রিস আলী জানান, এ বছর তিনি ৪ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছেন। ফলনও ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না।

রবিউল ইসলাম ৩ বিঘা, মধু মোল্লা দেড় বিঘা, রফিক ৪ বিঘা, নুরুল ইসলাম ১ বিঘা, জহুরুল, সেলিম, রেজাউল, জামাল এর মতো উপজেলার অধিকাংশ পাট চাষির একই অবস্থা। গত বছর পাটের দাম বেশি পাওয়ায় চলতি বছর পাটের আবাদে ঝুঁকে পড়ে এ উপজেলার কৃষকেরা।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মাঠে পানি না থাকায় পাট গাছ মরে যাচ্ছে। এর কারনে আগেই আমাদের পাট কাটতে হচ্ছে। গতবার আমরা এই সময়ের মধ্যে পাট কাটতাম। তবে এবার শ্রমিক সংকট। শ্রমিকের মজুরী ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। তার পরেও এলাকাতে শ্রমিক পাওয়া যায় না।

আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সজীব আল মারুফ আওয়ার নিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৫ হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। তবে যে বৃষ্টি হয়েছে তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ট নয়। বেশ কিছুদিনের খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে পাট চাষিরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়।
তিনি বলেন, বিল অঞ্চলে পানি রয়েছে। কিন্তু উঁচু অঞ্চলে পানির সংকট। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে এ সমস্যা দূর হবে বলে তিনি আশা করেন।