যশোরের মণিরামপুরে সার্জেন্ট সেজে প্রতারণা, যুবক ধরা

যশোরের মণিরামপুরে সার্জেন্ট সেজে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মোটরসাইকেল চালকদের সাথে প্রতারণা করার সময় হাতেনাতে এক যুবককে ধরে পুলিশ দিয়েছেন জনগণ।

রবিবার (১ মে-২০২২) সকালে মণিরামপুর-নওয়াপাড়া সড়কের হাজিরহাট স্লুইসগেটে দাঁড়িয়ে মোটরসাইকেল চালকদের আটকিয়ে সার্জেন্ট সেজে কাগজপত্র দেখার নামে টাকা আদায় করছিলেন মনিরুজ্জামান মনির নামের ওই যুবক।

এ সময় মোটরসাইকেল চালক এক কাঠ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন তিনি। পরে তাকে ধরে পুলিশে দেন স্থানীয়রা।

এ ঘটনায় আটক যুবকের বিরুদ্ধে মণিরামপুর থানায় মামলা হয়েছে। পরে বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

আটককৃত মনিরুজ্জামানের বাড়ি খুলনার খানজাহান আলী থানার গিলেতলার আধরা ডাক্তারবাড়ি এলাকায়। তার বাবা মিজানুর রহমান কুয়েত প্রবাসী।

মনিরুজ্জামানের দাবি- ৫-৬ বছর আগে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করেছেন। সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে এসে শয়তানের ফেরে পড়ে তিনি রাস্তায় মোটরসাইকেল চালকদের দাঁড় করিয়ে কাগজপত্র দেখছিলেন। এসময় জনগণ ধরে মারপিট করে তার টাকা কেড়ে নিয়েছেন বলে দাবি এ যুবকের।

হাজিরহাটের আঠারোপাকিয়া গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী আরজান হোসেন বলেন- পাঁচকাটিয়া এলাকায় আমার শ্রমিকরা গাছ কাটার কাজ করছিলেন। সকালে বাড়ি থেকে আমি মোটরসাইকেল চালিয়ে সেখানে যাচ্ছিলাম। পথে স্লুইসগেটের সামনে পৌঁছালে সংকেত দিয়ে আমাকে দাঁড় করান মনিরুজ্জামান। আমি দাঁড়াতেই গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চান। এরপর আমাকে ৫০০ টাকা জরিমানা করেন। আমার পকেটে ১০ হাজার টাকা ছিলো। একপর্যায়ে টাকা দেখতে পেয়ে সেগুলো ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন মনিরুজ্জামান। এ সময় ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে আশপাশের লোকজন চলে এসে মনিরুজ্জামানকে চ্যালেঞ্জ করেন।

আরজান বলেন- ওই লোকটি একা ছিলেন। তিনি যশোর ট্রাফিকের সার্জেন্ট পরিচয় দিয়েছেন। এ সময় লোকজনকে তিনটি পদকও দেখান তিনি। তখন সন্দেহ হলে লোকজন তাকে ধরে ফেলেন।

জসিম সরদার নামে এক পথচারী বলেন- রবিবার সকাল ৯টার দিকে পাঁচকাটিয়া থেকে গরু কিনে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে এ লোকটি আমাকে সংকেত দিয়েছেন। মোটরসাইকেলে আরো দুইজন ছিলেন। আমি দাঁড়াতে কাগজপত্র দেখতে চেয়েছেন। পরে জরিমানার ভয় দেখিয়ে ৫০০ টাকা নেন।

জসিম বলেন- অনেক মোটরসাইকেল ধরে কাগজপত্র দেখতে চেয়ে চালকদের কাছ থেকে ২০০-৫০০ টাকা করে নিয়েছেন এ লোক।

মণিরামপুর থানার এসআই আব্দুল হান্নান বলেন- খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই যুবককেসহ তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ করে থানায় এনেছি।

মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দীকি বলেন- ওই যুবক সার্জেন্ট সেজে মোটরসাইকেল চালকদের আটকিয়ে টাকা নিচ্ছিলো। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে ভূয়া পরিচয় দেয়ার অপরাধে মামলা দিয়ে তাকে আদালতে সোপর্দ করেছি।