সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় ছিনতাই প্রবনতা বেড়েছে, নেই পুলিশের কোন ভূমিকা

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় প্রতিদিন ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ব্যস্ততম রোড গুলোতে গ্রাম থেকে আসা মানুষ বেশির ভাগ ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে কদমতলি থেকে কুশিঘাট ও শ্রীরামপুর বাইপাসের আগ পর্যন্ত ছিনতাইকারীরা নিরাপদ রোড হিসেবে বেছে নিয়েছে।

এসব এলাকায় কখনও হাঁটা পথে, কখনোবা গাড়ি গতিরোধ করে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে তাদের জিনিসপত্র। এছাড়া সাধারণ মানুষ রিকশায় যাতায়াতের সময় মোটর সাইকেল থেকে ছোঁ মেরে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও জিনিসপত্রসহ ব্যাগ নিয়ে যাচ্ছে ছিনতাইকারীরা। কিছু দিন পূর্বে সিলেট রেল স্টেশন এলাকায় ছিনতাইয়ের সময় বাধা দিলে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে মারা যান এনজিও কর্মী।

এছাড়া ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া মানুষের আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। আহতদের অনেকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই বাসায় চলে যান। কিন্তু পুলিশের খাতায় এসব ঘটনা নথিভুক্ত হচ্ছে সাধারণ ডায়েরি হিসেবে। আবার অনেকেই আইনি ঝামেলায় পড়তে চান না, ফলে পুলিশের কাছেও যাচ্ছেন না। সকল ছিনতাইকারী ও অপরাধীদের আস্তানা হচ্ছে কদমতলীর বালুর মাঠে। সকল অপরাধের উৎস হচ্ছে বালুর মাঠ, কিছু সংখ্যক স্থানীয় প্রভাবশালী ও কিছু গুটি কয়েক রাজনৈতিক দলে নেতাদের ছত্রছায়ায় অহরহ ঘটছে ছিনতাই। শুধু ছিনতাই নয়, মোটর সাইকেল, বাসা বাড়ি, দোকান চুরির ঘটনা ঘটেছে হরহামেশা।

গোলাপগঞ্জ – জকিগঞ্জ রোডে রয়েছে বেশ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে উল্লেখ্য রয়েছে দুটি সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও একটি শিক্ষাবোর্ড, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে অনেক কর্মচারী কর্মকর্তা ও ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ নিতে এসে হতে হয় ছিনতাইর শিকার। আলমপুর বিআরটি অফিসের পাশে রয়েছে মোগলাবাজার পুলিশ ফাঁড়ি কিন্তু এ ফাঁড়ি থেকে আসছে না তেমন কোন আইনি পদক্ষেপ তার একমাত্র কারণ হচ্ছে পুলিশের সাথে স্থানীয়দের সখ্যতা বেশি।

তাছাড়া মেইন রোডে নেই কোন বাতি, সন্ধ্যা হলেই অন্ধকার রাজ্যে পরিণত হয়। আর ছিনতাই কারীদের হয়ে যায় নিরাপদ অভয়ারণ্য। সরকারী এতো প্রতিষ্ঠান থাকা সত্বে অত্র এলাকায় নেই কোন সিসি ক্যামেরা। সিলেট টিটিসিতে শুধু ক্যামেরা স্থাপন থাকলেও পাশে রয়েছে ফায়ার সার্ভিস, শিক্ষাবোড, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এসব অফিস গুলোর ভেতরে সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকলেও বাহিরে গেইটে নেই কোন ক্যামেরার স্থাপন। একদিকে অন্ধকার অন্য দিকে সিসি ক্যামেরা না থাকার ফলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ছিনতাইকারীরা।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, উঠিত বয়সী ছিনতাইকারীদের বেশির ভাগই মাদকসেবী। মাদকের টাকার জন্যই তারা ছিনতাইয়ের মতো অপরাধে জড়াচ্ছে। রাত নেমে আসলে এ আতঙ্ক বাড়ে কয়েকগুণ। নগরের কিছু এলাকায় অনটেস্ট বা নম্বরপ্লেট বিহীন মোটরসাইকেল বা গাড়ি ব্যবহার হচ্ছে ছিনতাইয়ের কাজে। এসময় ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পথচারী বা সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, টাকা-পয়সাসহ সবকিছু ছিনিয়ে নিচ্ছে। আর এতে বাধা দিলে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটছে। এসময় ছিনতাইকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হচ্ছেন ভিকটিমরা। গুরুতর জখম থেকে মৃৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

দক্ষিণ সুরমায় ছানতাইকারীরা বেশি ভাগ বসবাস করে কদমতলী, আলমপুর, কুশিঘাট, গোঠাটিকর, শিবাবাড়ী, মোমিন খলা, স্টেশন রোড, ভার্তখলা, ঝালোপাড়া বিভিন্ন কলোনিতে।

এদিকে এমন ভীতিকর পরিস্থিতি থেকে স্থানীয় সিলেটবাসী পরিত্রানের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।