পরোটা নরমে ব্যবহৃত ক্ষতিকারক রাসায়নিক ‘সাল্টু’ কী?

কাকডাকা ভোর মানেই হোটেল, রেস্তোরাঁয় গরম পরোটার সঙ্গে ভাজি আর চায়ের প্রস্তুতি।

আর কোনো দোকানের পণ্য বিক্রি হোক বা না হোক পরোটা, ভাজি খেতে সকালবেলা রেস্তোরাঁয় ভিড় জমবেই।

বিশেষ করে যে রেস্তোরাঁর পরোটা নরম তুলতুলে, সেখানে ভোক্তাদের ভিড় অনেক বেশি।

তবে এসব পরোটা এমনি এমনি যে নরম হয়ে যায় না, সে বিষয়ে ভাবছেন না অনেকেই।

জানা গেছে, হোটেলে পরোটা নরম করতে ব্যবহৃত হচ্ছে সাল্টু নামে এক রাসায়নিক পদার্থ।

সাল্টু কী সে বিষয়ে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওসহ পোস্ট করেছেন আকরামুল হক নামের একজন সচেতন নাগরিক।

তিনি তার ফেসবুক পোস্টে জানান, রেস্তোরাঁয় পরোটা নরম করতে প্রতিদিনই ব্যবহৃত হচ্ছে এই সাল্টু।

তিনি খোঁজ নিয়ে জানেন, যে রাসায়নিক পদার্থকে সাল্টু বলা হচ্ছে, তা হচ্ছে- অ্যামোনিয়া সারের গুঁড়ো।

ফসলের উর্বরতা ও পুষ্টিতে ব্যবহৃত এই সারের মূল যৌগ অ্যামোনিয়া হচ্ছে নাইট্রোজেন এবং হাইড্রোজেনের সমন্বয়ে তৈরি এক যৌগ।

অ্যামোনিয়ার ব্যাপক ব্যবহার বিপজ্জনক বলে জানিয়েছেন রসায়ন বিশেষজ্ঞরা।

অথচ এই সারের গুঁড়ো দেদারছে পরোটা নরমের উদ্দেশ্যে রেস্তোরাঁয় ব্যবহৃত হচ্ছে। আকরামুল হকের ফেসবুক পোস্টটি হুবুহু দেয়া হলো- ‘নির্বাচনী কাজে কুড়িগ্রাম গিয়েছিলাম। রাজীবপুর উপজেলার বালিয়ামারী বাজারে ভোরে নাস্তা করতে গিয়ে হোটেলের পরটা এত নরম কেন জিজ্ঞেস করায় হোটেলের কর্মচারীর উত্তর পরোটায় সাল্টু আছে।

সাল্টু কী জিজ্ঞেস করায় সামনে ভাণ্ড আনতেই দেখি ভাণ্ডের ভেতর রয়েছে অ্যামোনিয়া সারের গুঁড়ো।

ভাণ্ডের মুখ খুলে সামনে ধরে শ্বাস নিতে দেখি দমবন্ধ হয়ে আসছে। বালিয়ামারী বাজারের তিন হোটেলেই সাল্টু নামের অ্যামোনিয়া সারের ব্যবহার দেখেছি।

কুড়িগ্রাম থেকে জামালপুর পর্যন্ত আসতে নানা হোটেলে চা পানের জন্য নেমেছি, সবখানেই সাল্টুর ব্যবহার সম্পর্কে হোটেল মালিকরা অবগত। কেউ স্বীকার করছেন, কেউ করছে না।

ঢাকায় ফিরে নানা হোটেলে নরম পরোটা ও তন্দুর রুটির খোঁজে নেমে দেখি কেউ সাল্টুর বিষয় স্বীকার করছে না।

অতঃপর মোহাম্মদপুরে দুই হোটেলের দুই কর্মচারী ইঙ্গিতে বিষয়টি স্বীকার করলেন।

তাদের ভাষ্য, পরোটা নরম চান কাস্টমাররা, তাই এই সাল্টু মিশ্রণের ব্যবহার চলছে।

পুরান ঢাকায়ও একই কারবার, কেউ স্বীকার করছে না। টেবিল বয়গুলোকে টিপস দিয়ে জানা গেল সাল্টুই ব্যবহার হচ্ছে পরোটা ও তন্দুরী নরম করতে।’

দেখুন পরোটায় ব্যবহৃত ক্ষতিকারক সাল্টু (অ্যামোনিয়া সারের গুঁড়ো) :

Posted by Akramul Haque on Saturday, February 2, 2019