অন্যের স্ত্রী নিয়ে লাপাত্তা জাপা নেতা

নির্বাচনের খবর নেই। তারপরও তিনি জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এসে স্বয়ং দলের সমর্থন জানিয়ে গেছেন। এরপর থেকেই এসএম মুশফিকুর রহমান সজল পরিচিতি পাচ্ছেন খুলনা সিটি করপোরেশনে (কেসিসি) জাতীয় পার্টি মনোনীত মেয়র প্রার্থী।

তবে এসব ছাপিয়ে খুলনা মহানগর জাপার এই আহ্বায়ক খবরে এসেছেন ভিন্ন কারণে। অন্যের স্ত্রীকে ভাগিয়ে নিয়ে আপাতত খুলনা ছেড়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে এজন্য মামলাও করেছেন ওই গৃহবধূর স্বামী।

বলা হচ্ছে, মুশফিকুর রহমান আপাতত লাপাত্তা। তবে তিনি দাবি করেছেন, যে নারীকে নিয়ে অভিযোগ, তিনি এখন তার স্ত্রী। দু’জনে একান্ত সময় কাটাতে ঢাকায় অবস্থান করছেন। শিগগিরই খুলনায় ফিরবেন।

মুশফিকুর রহমান সজল খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানার আবাসিক এলাকার ৩নং রোডের ৩১৫নং বাড়ির মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে।

তার বিরুদ্ধে গতবছরের ৮ অক্টোবর গোলাম সরোয়ার বাপ্পী বাদী হয়ে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। বরিশাল জেলা সদরের দফতর খানা রোডের বাসিন্দা মৃত বিমল কুমার রায়ের ছেলে বাপ্পীর স্ত্রী হুমায়রা আহমেদ জিনিয়াকেই ভাগিয়ে নিয়েছেন মুশফিকুর রহমান।

মামলাটি আমলে নিয়ে গতবছরের ১৬ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সম্প্রতি এই পরোয়ানার কপি সোনাডাঙ্গা থানায় পৌঁছেছে। মূলত পরোয়ানার পর থেকেই এই জাপা নেতাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ।

সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মমতাজুল হক বলেন, ‘মুশফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বরিশাল আদালতের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার একটি কপি থানায় এসেছে। এরপরই তাকে গ্রেফতারে পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু, পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যে আমরা জানতে পেরেছি, মুশফিকুর রহমান এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। শিগগিরই তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।’

মামলার এজাহারে বাদী বাপ্পী উল্লেখ করেন, আমার স্ত্রী হুমায়রা আহমেদ জিনিয়ার পূর্বপরিচিত আসামি মুশফিকুর রহমান। এরই সূত্র ধরে তিনি প্রায় তাদের বাসায় আসতেন। এক পর্যায়ে মুশফিক জিনিয়ার সঙ্গে পরকীয়া গড়ে তোলে। গতবছরের ১৭ আগস্ট বিকেলে বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে জিনিয়া বের হন।

অনেক সন্ধান করেও স্ত্রীকে পাননি বাপ্পী। এক পর্যায়ে জানতে পারেন মুশফিকের সঙ্গে তিনি পালিয়ে গেছেন। পরে মামলা করেন বাপ্পী।

বাপ্পী জানান, মুশফিক প্রতিনিয়ত তাকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দিচ্ছেন। লোকজন দিয়ে মারধরও করিয়েছেন। তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

ইতোমধ্যে বাপ্পী খুলনার পুলিশ কমিশনারের কাছে মুশফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে লিখিত আবেদন করেছেন।

এ বিষয়ে মহানগর জাপার যুগ্ম-আহ্বায়ক সৈয়দ খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘মেয়র পদে মুশফিকুর রহমানকেই চেয়ারম্যান গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন। তবে বিগত ৪/৫ মাস তিনি খুলনায় অনুপস্থিত। ফোনেও আমরা তাকে পাই না।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরাও লোক মুখে শুনেছি মুশফিকুর রহমান এক ব্যক্তির স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গেছেন। এজন্য তার নামে মামলা হয়েছে বলেও খুলনার বাইরে রয়েছেন। তবে মুশফিকুর আমাদের এ বিষয়ে কিছু জানাননি।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘জিনিয়ার সঙ্গে তার প্রেম ছিল। প্রেমের টানেই সে স্বামীর ঘর ছেড়েছে। বিয়ের পর এখন আমরা দাম্পত্য জীবন উপভোগ করছি। একান্ত সময় কাটাতেই ঢাকায় রয়েছি।’

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘জিনিয়ার সাবেক স্বামী মামলা করেছেন কি না আমার জানা নেই। পরোয়ানা সম্পর্কেও অবহিত নই।’

মুশফিকুর রহমান আরো বলেন, ‘পারিবারিক, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক কাজ নিয়ে ঢাকায় ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। এজন্য খুলনা আসতে পারছি না। শিগগিরই খুলনায় আসব।’