এবার ইউপি সদস্য প্রার্থী গুলিবিদ্ধ কক্সবাজারে

দুর্বৃত্তের গুলিতে মেম্বার প্রার্থীর বড় ভাই ও জেলা শ্রমিক লীগ সভাপতির মৃত্যুর পর জানাজা শেষ হবার ৫ ঘণ্টার মাথায় আরেক ইউপি সদস্য প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীতে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের গুলিতে রেজাউল করিম রেজা নামে এক ইউপি সদস্য প্রার্থী আহত হয়েছে।

সোমবার (৯ অক্টোবর) রাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের তোতকখালী বটতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত রেজাউল করিম রেজা কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদের ছেলে এবং আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ইউপি নির্বাচনে ওই ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী। পিএমখালী ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন তিনি।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) রাতে গুলিবিদ্ধ রেজাউল করিম রেজাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্য এএসআই রিপন চৌধুরী।

কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর-উল-গীয়াস জানান, রাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের তোতকখালীতে নির্বাচনী সহিংসতার জেরে এক ইউপি সদস্য প্রার্থী অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হয়েছে বলে শুনেছেন।

পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বলেও জানান তিনি।

তবে কারা, কি কারণে এ ঘটনা ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনো পুলিশ নিশ্চিত নয় বলে জানান ওসি শেখ মুনীর-উল-গীয়াস।

স্থানীয় সূত্র জানায়, অন্যদিনের মতো সোমবার সন্ধ্যা থেকে এলাকার পাড়ায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছিলেন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড তোতকখালীর মেম্বার প্রার্থী রেজাউল করিম। রাত নয়টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ রেজাউল করিমকে এলাকার লোকজন কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, ছরা গুলির অনেক স্প্রিন্টার তার দুই উরুর পেছনে এবং পায়ের বিভিন্ন অংশে বিদ্ধ হয়েছে।

গুলির ঘটনাকালে জেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠন নেতৃত্ববৃন্দ ঘটনাস্থলের একটু দূরে অবস্থান করছিলেন। পিএমখালী ইউপি নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী সিরাজুল মোস্তফার পক্ষে পথসভা করতেই সকলে সেখানে যান। এসময় এমন গুলির ঘটনা সবাইকে আতংকিত করেছে।

পিএমখালীর সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে একটি চক্র এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। কে ঘটনা করেছে সেটা নিশ্চিত করে কেউ বলতে না পারলে, রেজার গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়ে উক্ত ওয়ার্ডের অপর প্রতিদ্বন্দ্বী দু’প্রার্থী নিজেদের নির্দোষ দাবি করে অপরজনকে দায়ী করেছেন।

বর্তমান মেম্বার ও প্রার্থী তাজউদ্দিন তাজমহলের দাবি তিনি পথসভা করার সময় গুলিবিদ্ধ হওয়ার সংবাদ পান। জনপ্রিয়তা বেশি ও তিনি আবারো মেম্বার হবেন সেটা দেখে ফায়দা হাসিল করতে অপর প্রার্থী মিজান এ ঘটনা করতে পারে বলে দাবি তার।

কিন্তু অপর প্রার্থী মিজানুর রহমানের দাবী ছয় ভাইয়ের পাড়ায় প্রচারণা চালানোর সময় ঘটনার সংবাদ পেয়েছেন তিনি। এবার জনপ্রিয়তায় তিনি এগিয়ে আছেন দেখে তার বিজয় নস্যাৎ করতে তাজমহল লোক ভাড়া করে এ ঘটনা করতে পারে যা তদন্তে বেরিয়ে আসবে বলে মন্তব্য তার। তার মতে, প্রতিবার ভোটে তাজমহল এ ধরণের ঘটনার জন্ম দেয়।

তবে গুলিবিদ্ধ প্রার্থী রেজা এ নিয়ে কোনো বক্তব্য দেননি।

স্থানীয়দের মতে, তোতকখালী ওয়ার্ডের তিন মেম্বার প্রার্থীই একই পরিবারের চাচাতো জেঠাতো ভাই। তাদের মধ্যে আগে থেকে পারিবারিক বিরোধ প্রকট।

কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এবং হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। ঘটনার ক্লু বের করার চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার ঝিলংজা ইউনিয়নে বিসিক ও লিংকরোড় এলাকার মেম্বার প্রার্থী ও বর্তমান মেম্বার কুদরত উল্লাহ সিকদার ও তার বড় ভাই জেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার কর্মী-সমর্থক নিয়ে অফিসে আলোচনা করার সময় দুর্বৃত্তরা গুলি করে পালিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন থাকার দুদিনের মাথায় মারা যান জহিরুল ইসলাম। তাকে সোমবার বিকেল ৫টার দিকে দাফন করা হয়। এর ৪ ঘণ্টার মাথায় পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন পিএমখালীতে গুলির ঘটনায় আতংক বিরাজ করছে সর্বত্র।