কুড়িগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের কমিটিকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট

কুড়িগ্রাম ডায়াবেটিক হাসপাতালের সমিতির নবগঠিত বিতর্কিত কমিটির বিরুদ্ধে স্থানীয় এমপি পনির উদ্দিন আহমেদ রিট পিটিশন দাখিলের প্রেক্ষিতে অগণতান্ত্রিক, অসাংবিধানিকভাবে গঠিত কমিটির সকল কার্যক্রমের বৈধ কাগজপত্র উপস্থাপনের আদেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।

অভিযোগে জানা যায়, গত ২০১৯ সালের ৮ই জুন দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কুড়িগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির দ্বি-বার্ষিক কার্যনির্বাহী কমিটি গঠনের জন্য সমিতির সভাপতি ও কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদকে দায়িত্ব দেয়া হয়।

সমিতির সাংগাঠনিক কার্যক্রম শক্তিশালী করতে দফায় দফায় আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন পনির উদ্দিন আহমেদ। এছাড়া বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারীতে কিছুটা বিলম্ব হয় কমিটি গঠনের কাজ। পরবর্তীতে পনির উদ্দিন আহমেদ উদারতার পরিচয় দিয়ে নিজে কমিটিতে না থেকে অবসর প্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মাহফুজুর রহমানকে সভাপতি এবং ডাঃ মাহফুজুর রহমান মজনুকে মহাসচিব করে ২০২২-২৩ সালের ৬ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটি অনুমোদন দেন তিনি। এতেই বাঁধ সাধে কমিটির সহ-সভাপতি পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম।

পরবর্তীতে দুলাল বোস, আব্দুল ওয়াজেদকে নির্বাচন কমিশনার এবং রফিকুল ইসলামকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাজিয়ে ১৫ জুলাই ২০২২ইং তারিখে নির্বাচন সম্পন্ন হয়। কাজিউল ইসলাম মহাসচিব এবং গণফোরামে যোগদানকারী অবসারপ্রাপ্ত মেজর মুহা. আব্দুস সালামকে সভাপতি ঘোষণা করা হয়। পনির উদ্দিন আহমেদের অজান্তেই তাকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর আব্দুস সালামের প্রতিদ্বন্দ্বী দেখিয়ে ৬৯ ভোটে পরাজিত দেখানো হয়। ২২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির শুধুমাত্র সভাপতি ব্যতিত সবাইকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত দেখিয়ে ফলাফল শীট প্রকাশ করা হয়েছে। কুড়িগ্রামের স্বনামধন্য শিল্পপতি, সমাজসেবক এবং জাতীয় সংসদের সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ শূন্য ভোট পাওয়ায় উক্ত কমিটি বিতর্কিত হয়ে পড়ে।

এরই প্রেক্ষিতে অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক উপায়ে কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠনের অভিযোগ এনে গত ২৯ আগষ্ট ২০২২ইং তারিখে উচ্চ আদালতে কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ কমিটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সদস্য বলেন, ডায়াবেটিক সমিতির সর্বোচ্চ অর্থদাতা এমপি পনির উদ্দিন আহমেদ। তার অনেক শুভাকাঙ্খী এবং নিকটজন ভোটার থাকা পরেও তাকে নির্বাচনে শূন্য ভোট প্রাপ্তি দেখানোর ঘটনাটি বর্তমান নবগঠিত কমিটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বর্তমান কমিটির কিছু অতি উৎসাহী ব্যক্তির কারণে জনস্বার্থের এই প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যৎ এখন অনেকটাই অনিশ্চিত।

সভাপতি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পনির উদ্দিন আহমেদ শূন্য ভোট পাওয়ার মত ব্যক্তি কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে নির্বাচন কমিশনার দুলাল বোস বলেন, পনির উদ্দিন আহমেদ শূন্য ভোট পাওয়ার মত ব্যক্তি নন। তিনি মূলত ভোটের মত ভোট না করায় শূন্য ভোট পেয়েছেন।

প্রধান কমিশনার রফিকুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কোন প্রকার মন্তব্য করতে পারবো না।
বর্তমান কমিটির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর আব্দুস সালাম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কমিটি করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী উচ্চ আদালতের রিটের জবাব দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে কথা হলে কুড়িগ্রাম-২ আসনের এমপি পনির উদ্দিন আহমেদ জানান, আমি গঠনতান্ত্রিক উপায়ে কমিটি করেছিলাম কিন্তু সেই বৈধ কমিটিকে প্রত্যাখান করে গোপনে যোগসাজশের মাধ্যমে চক্রান্তমূলক তারা পাঁতানো নির্বাচন সম্পন্ন করে। এতে আমার সামাজিক সম্মানহানি হওয়ায় ন্যায় বিচারের আশায় উচ্চ আদালতের আশ্রয় নিয়েছি।