খাগড়াছড়িতে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে নেতাকর্মীদের ওপর বর্বরোচিত হামলা ও শহরজুড়ে নৈরাজ্যের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবী জানিয়েছে জেলা আওয়ামীলীগ।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বিএনপি এমন তান্ডব চালিয়েছে বলে দাবী আওয়ামীলীগের। মঙ্গলবার বিকেলে(৬টা) জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবী করেন জেলা আওয়ামীলীগ নেতারা।

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী। লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, বিএনপি-জামাত ও চরমোনাই গুন্ডাবাহিনীর হামলায় আহত নেতাকর্মীদের মধ্যে ১০/১২জন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

এসময় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বক্তব্য রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন, দুই ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বিএনপির নৈরাজ্য এবং পৌরসভার মতো রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশের নিস্ক্রীয় ভূমিকা থাকলে তারাও পার পাবেনা।

তিনি বিএনপির উস্কানীমূলক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। দায়ী ব্যক্তিদের চিহিৃত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন তিনি।

উল্লেখ্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছে। সংঘর্ষে সাংবাদিক ও পুলিশসহ উভয়ের অন্তত: অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
মূলত: আওয়ামীলীগের উন্নয়ন শোভাযাত্রা ও বিএনপির পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে।

পৌর শাপলা চত্বরে এলাকা এসময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ চলাকলে পৌরসভা কার্যালয় ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে বিএনপি নেতাকর্মীরা। কয়েকটি মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স’র কর্মীরা আগুন নেভায়।

আওয়ামীলীগ উন্নয়ন শোভাযাত্রা এবং বিএনপি তাদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী পদযাত্রা বের করাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। থেমে থেমে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কেএম ইসমাইল হোসেন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির সরকারের উন্নয়ন বিরোধী কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে খাগড়াছড়ি শহরের অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তারা আওয়ামীলীগের অফিসে হামলা চালিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত

আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে বিএনপির হামলা অভিযোগ:- পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়িতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা হামলা চালিয়ে শতাধিক নেতা-কর্মীকে আহত করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। সকালে জেলা শহরে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, সকাল ৯টায় জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে জেলা শহরের নারিকেল বাগানস্থ দলীয় কার্যালয়ে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এসময় কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্থ করতে বিএনপির লোকজন বিনা উস্কানিতে আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালায়। এতে আওয়ামী লীগের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়।

আহতদের মধ্যে রয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক নুরুল আজম, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কেএম ইসমাইল, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য ক্যাজরী মারমাসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এর নেতা-কর্মীরা।

এছাড়া এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ ও সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। হামলা চালানো হয়েছে পৌরসভায়ও। এসময় পৌরসভার বিভিন্ন আসবাবপত্র, জানালার গ্লাস ভেঙে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। পৌরসভার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে অগ্নিসংযোগ করে তারা।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, দলীয় কার্যালয়ে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা কর্মসূচির আয়োজনে এসে বিএনপি নেতা-কর্মীরা হঠাৎই হামলা চালিয়ে আমাদের নেতা-কর্মী, পুলিশ-সাংবাদিকসহ শতাধিক লোকজনকে আহত করে। পৌরসভারও ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে তারা। এ ঘটনার সুষ্টু বিচার দাবি করেন তিনি। উন্নয়ন শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসার পথে বিএনপির ক্যাডাররা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।

এসময় খাগড়াছড়ি পৌরসভাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে। আওয়ামীলীগের অর্ধশতাধিক নেতা কর্মী আহত হয়েছে।তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।তিনি আরো জানান,অতর্কিত হামলায় পৌরসভা কার্যালয় ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করে বিএনপি। এ ঘটনায় পুলিশের নিষ্কিয়তাকে দায়ী করেন তিনি।

এসময় খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মো: আরিফুর রহমান, সদর থানার দুজন এসআইসহ অন্যান্য পুলিশ ও সাংবাদিক আহত হন।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান(প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি বলেন-আমাদের নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে, এতে আমাদের জেলা আওয়ামীলীগের উপ দপ্তর সম্পাদক নুরুল আজমসহ ৫০জনের অধিক গুরুত্ব আহত হয়েছে। বিএনপির সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনের ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।