খাগড়াছড়ির পাহাড়ের বৈসাবি উৎসব শেষ হলেও যেন শেষ হয়নি আনন্দ

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে তথা পাহাড়ের বৈসাবি উৎসব শেষ হলেও শেষ হয়নি আনন্দ। টানা কয়েকদিন ধরে চলা পাহাড়ের বৈসাবি উৎসব শেষ হলেও যেন শেষ হয়নি আনন্দ। এখনো পাড়া মহল্লায় ধুম চলছে খেলাধুলাসহ নানা আয়োজন।

মারমাদের ঐতিহ্যবাহী ‘ধ’ খেলার মধ্যে দিয়ে সাংগ্রাই ও বর্ষবরণ উদযাপন অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা শহরে মারমাদের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী “ধ” খেলার মধ্যে দিয়ে সাংগ্রাই ও বর্ষবরণ উপলক্ষে বাংলাদেশ মারমা ছাত্র ও যুব ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে শুরু হয়েছে বিভিন্ন খেলাধুলা ও সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানের আয়োজন।

পাহাড়ে প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি’র অন্যতম আর্কষণ মামরা স¤প্রদায়ের “সাংগ্রাই”। এ সাংগ্রাই উপলক্ষে মারমা স¤প্রদায় পানি খেলাসহ নানা ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলার আয়োজন করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরের মতো এবার খাগড়াছড়ি কারিগড়ি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সংলগ্ন মাঠে এ ‘ধ’ খেলার আয়োজন করা হয়।
মঙ্গলবার(১৮ই এপ্রিল) গোলাবাড়ি এলাকায় এ ‘ধ’ খেলার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ¤্রাসাথোয়াই চৌধুরী।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কংচাইরী মাস্টার, সাধারণ সম্পাদক কংজপ্রু মারমা, ক্যরী মগ, বাংলাদেশ মারমা যুব ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি’র সাধারন সম্পাদক সাথোয়াইপ্রু চৌধুরী, বাংলাদেশ মারমা ছাত্র ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটি’র হ্লাপ্রæ মারমা. আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মংখই মারমা।

¤্রাসাথোয়াই চৌধুরী বলেন, সাংগ্রাই ও বর্ষবরণ উপলক্ষে বাংলাদেশ মারমা ছাত্র ও যুব ঐক্য পরিষদ মারমা সমাজের নতুন প্রজন্মের কাছে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা ও সংস্কৃতিগুলো ধরে রাখার জন্য এই আয়োজন করেছে। এটি প্রতি বছর করা হয়। এখান থেকে নতুন প্রজন্মরা শিখে থাকে। বিশেষ করে ‘ধ’ খেলাটা তাদের একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা। এই খেলায় প্রতি টিমে নয় জন ও নয়টি ‘ধ’ (গাছের তৈরি এক ধরনের খেলার উপকরণ) থাকে। একজনের একটি নির্ধারিত “ধ” দেখিয়ে দিতে হবে এবং সেটিকে মারতে হবে। সেটি মারতে পারলে পয়েন্ট পাবে, পর্যায়ক্রমে যে বেশি পয়েন্ট পাবে সেই বিজয়ী হবে।
খেলায় অংশ গ্রহণকারীরা বলেন, এই সাংগ্রাই ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে ও খেলায় অংশ গ্রহণ করতে পেরে তারা আনন্দিত। তারা বলেছেন সাংগ্রাই বছরে একবারই হয় আর এই আনন্দ থাকে প্রায় সপ্তাহ জুড়ে।
আয়োজক কমিটিরা জানান, এই উৎসব চলবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। সেদিন ২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পানি খেলা চলবে।

বছর ঘুরে আবারও আসবে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব বৈসাবি। পাহাড়ে বইবে আনন্দের বন্যা। সে অপেক্ষায় থাকবে পাহাড়িদের পাশাপাশি বাঙালি স¤প্রদায়।