খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে সাম্প্রদায়িক হামলার ১৯বছর উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি উপজেলাতে সেটলার কর্তৃক সাম্প্রদায়িক হামলার ১৯বছর উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মহালছড়িতে পাহাড়ি গ্রামে সেটলার কর্তৃক সাম্প্রদায়িক হামলার ১৯বছর উপলক্ষে ও বিশিষ্ট মুরুব্বি বিনোদ বিহারী খীসাসহ হত্যার শিকার হওয়াদের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ) মহালছড়ি ইউনিট।

শুক্রবার(২৬শে আগস্ট) বেলা ২টার দিকে মহালছড়ি সদর এলাকায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইউপিডিএফ-এর সংগঠক বিজগ চাকমার সঞ্চালনায় মিত্র চাকমার সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফ এর সংগঠক প্রকাশ চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশন এর সাধারণ সম্পাদক রিতা চাকমা, পিসিপি’র জেলা সভাপতি নরেশ ত্রিপুরা। সভায় হামলার ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকার জনপ্রতিনিধি,গণ্যমান্যসহ শতাধিক এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন।

সভা শুরুতে বিনোদ বিহারী খীসাসহ হত্যার শিকার হওয়াদের স্মরণ করে দাঁড়িয়ে ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
বক্তারা বলেন, ২০০৩ সালের ২৬শে আগস্ট পাহাড়িদের ওপর যে হামলা চালানো হয়েছিল তা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। তৎসময়ে মহালছড়িতে দায়িত্বরত সেনা কর্মকর্তারাই মূলত এই হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। আর সেনা সদস্যদের সহায়তায় সেটলাররা এই বর্বর হামলা চালিয়েছিলো।

এ হামলায় ১০টির অধিক গ্রামে ৪ শতাধিক ঘরবাড়ি, বৌদ্ধ বিহার পুড়ে ছাই করে দেওয়া হয়, বৌদ্ধভিক্ষুদের ওপর হামলা করা হয় এবং ১০জন জুম্ম নারীকে ধর্ষণ এবং বিশিষ্ট মুরুব্বী সাবেক চেয়ারম্যান বিনোদ বিহারী খীসা ও ৮মাস বয়সী এক শিশুকে হত্যা করে হামলাকারী।

বক্তারা দীর্ঘ ১৯ বছরেও মহালছড়িতে সেটলার দ্বারা সংঘটিত সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার ও হামলাকারীদের শাস্তি না হ্ওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই বিচার না হওয়ার মাধ্যমে এটাই প্রমাণ হয় যে রাষ্ট্রীয় মদদেই এই হামলা সংঘটিত করা হয়েছে।
তারা আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পাহাড়ি গ্রামে লুটপাত, অগ্নিসংযোগ, হামলার মধ্য দিয়ে ভূমি বেদখলের প্রচেষ্টাসহ পাহাড়িদের অস্তিত্ব বিলীন করে দেয়ার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। গত ৫ই জুলাই জয়সেন পাড়ায় পাহাড়িদের ভূমি বেদখলের উদ্দেশ্যে ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটপাট তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। রাষ্ট্রীয় মদদ ছাড়া সেটলারদের পক্ষে এমন হামলা, অগ্নিসযোগ করে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া সম্ভব হতো না।

সভা থেকে বক্তারা কালক্ষেপণ না করে হামলায় জড়িত ও মদদদাতাদের আইনের আওতায় এনে যথাযথ বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। একই সাথে বক্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি জবরদখল, পাহাড়িদের ওপর সাম্প্রদায়িক হামলা ও অন্যায় দমন-পীড়ন বন্ধ করারও জোর দাবি জানিয়েছেন।