টাঙ্গাইলে পালাক্রমে শিশু ধর্ষনের পর হত্যা, গ্রেফতার- ৩

টাঙ্গাইলের বাসাইলে এক শিশুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বাসাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

বিষয়টি পিবিআই পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন নিশ্চিত করেছেন। নিহত তিশা আক্তার টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের মো. আবু ভূইয়ার মেয়ে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছেন- ভাটপাড়া গ্রামের স্বপন মন্ডলের ছেলে গোবিন্দ মন্ডল (১৯), আনন্দ মন্ডলের ছেলে চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল (১৭) ও লালিত সরকারের ছেলে বিজয় সরকার (১৬)।

টাঙ্গাইলের পিবিআই পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন জানান, তিশা আক্তারের নাচ দেখে তার বাড়ির আশে পাশের গোবিন্দ মন্ডল, চঞ্চল চন্দ্র মন্ডল ও বিজয় সরকার নাচে আকৃষ্ট হয়। বিকৃত যৌন লালসা তাদের মনে পোষণ করে তিশাকে বিভিন্ন সময় নানা কায়দায় উত্যক্ত করতো। দুই মাস আগে তিশা তার মা সম্পা বেগমের কাছে বিষয়টি খুলে বলে। কিন্তু আসামীরা বখাটে ও প্রভাবশালী হওয়ায় সম্পা তাদের তেমন কিছু বলেননি। তারা তিশার মায়ের গতিবিধি অনুসরণ করতো। আসামীরা জানতে পারেন তিশাকে বাড়িতে একা রেখে তার মা তার ছেলে শুভর স্কুল ছুটির পর তাকে এগিয়ে আনতে যায়।

পুলিশ সুপার জানান, গত ২৬ মে সকালে শুভকে নিয়ে তার মা পার্শ্ববর্তী শহীদ ক্যাডেট একাডেমিতে নিয়ে গেলে আসামীরা তিশার ঘরে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে তার মার ওড়না দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। তার মা বাড়িতে এসে তিশাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। স্থানীয় তাকে উদ্ধার করে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, তার বহনকৃত অ্যাম্বুলেন্স গাজীপুর পর্যন্ত গিয়ে নষ্ট হলে তাকে সাভার এনাম মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৯ মে তিশার মৃত্যু হয়। ওই দিনই বাসাইল থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলার লাশটি ময়না তদন্ত করা হয়। ৪ জুন ময়না তদন্তের রির্পোটে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। ওই দিনই তিশার বাবা আবু ভুইয়া বাদি হয়ে বাসাইল থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পিবিআই স্ব উদ্যোগে তদন্তের জন্য গ্রহণ করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার আশরাফুল কবির তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীদের গ্রেপ্তার করে।

টাঙ্গাইলের পিবিআই পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন বলেন, আসামীরা নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। জবানবন্দি না দিলে মামলা তদন্তের স্বার্থে আদালতের রিমান্ড আবেদন করা হবে।

তিশার মা সম্পা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে যারা অমানবিকভাবে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে ফাঁসি দাবি করছি। যাতে পরবর্তীতে আর কোন মায়ের কোল এভাবে খালি না হয়।