নওগাঁর নিয়ামতপুরের নির্বাহী কর্মকর্তার অদ্ভুত ঢং নিয়ে কর্মব্যস্ত

নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলায় গত ২৪ জুলাই ২০২২ মোঃ ফারুক সুফিয়ান নিয়ামতপুরে উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিসেবে যোগদান করেন।

যোগদানের আগে গত ২৩ জুলাই ইউএনওর বাসভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা হয়। নির্ধারিত বাসভবনের ভিতরের প্রায় ৫০ বছরের পুরাতন বিশাল আকৃতির একটি গাব গাছ দিনে-দুপুরে কেটে রাতের অন্ধকারে বাইরে বিক্রি করতে গেলে বিষয়টি স্থানীয়দের দৃষ্টিগোচর হয়।

পরবর্তীতে তার খাপছাড়া আচরণ ধীরে ধীরে স্থানীয় ও অফিস পাড়ার কর্মকর্তা কর্মচারী দের নজরে আসে। এর-ই মধ্য কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে উক্ত পরিত্যক্ত বাসভবনটি নির্বাহী আদেশে বিভিন্ন খাতের বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থে বার বার সংস্কার করে সরকারের নির্ধারিত মাসিক ভাড়া ফাঁকি দিয়ে ওই পরিত্যক্ত বাসায় এখনো স্ব-পরিবারে বসবাস করছেন নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক সুফিয়ান।

ইউএনও অফিস সূত্রে যানা যায়, গত ২৩ জুলাই ইউএনওর বাস ভবন ও উপজেলা পরিষদ হলরুম (স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রোড) পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়।

বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে,ভবনের বিদ্যুৎ ও পানির বিল উপজেলা পরিষদের সরকারি তহবিল থেকে এখন পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়ে আসছে।

অপরদিকে উনার নির্দেশে, রাজস্ব খাতে এবং পূর্ব হতে প্রশাসনের দাপ্তরিক প্রয়োজনে কর্মরত অন্যান্য কর্মচারীদের বেতন ভাতা আটকিয়ে রাখার অভিযোগ মিলেছে। ইতিমধ্যে তিনি কয়েক জনের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থে নির্মিত আবাসনে বসবাস এবং সরকারী অর্থ খরচের অভিযোগ এনে পত্র মারফত ব্যাখ্যাও চেয়েছেন।

শুধু কি তাই, তার প্রশাসনে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারী, স্থানীয় নির্বাচিত জন-প্রতিনিধিগনসহ অধিনস্তদের সাথে ইউএনও’র দূরত্ব দিন দিন বেড়েই চলেছে। ফলস্বরূপ ইতিমধ্যে উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ আইন অশৃঙ্খলা ও মাসিক সমন্বয় সভা বর্জন করেছেন সকল ইউপি চেয়ারম্যানগন।

কথা উঠেছে অদ্ভুত ঢং বিশিষ্ট এই ইউএনও নিজে উক্ত পরিত্যাক্ত বাসভবনটি অবৈধ ভাবে ব্যবহার, সংস্কার সহ বিদ্যুৎ ,পানি বিল সরকারী তহবিল হতে প্রদান করতে পারলে অন্যান্য ছোট পর্যায়ের কর্মচারীরদের ক্ষেত্রে কেন একই হবে না?

এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্প ঘর বানানোর স্থান নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কোন সমন্বয় ছাড়া নিজের মন মত জায়গা নির্বাচন করছেন, সেখানে উপকার ভোগীরা থাকতে ইচ্ছুক নয়। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপকার ভোগী ইউএনও এর সাথে বাড়ির বিষয়ে কথা বলতে গেলে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। উল্লেখ্য থাকে যে, আইনশৃঙ্খলা ও মাসিক সমন্বয় সভা বর্জন করার পর ইউএনওর কোন মিটিংয়ে নির্বাচিত জন-প্রতিনিধি ইউপি চেয়ারম্যানগণ অংশগ্রহণ করেননি। এমনকি তাঁদের কোন বিষয়ে খোঁজ খবর নেননি ইউএনও ফারুক সুফিয়ান। যা জন-প্রতিনিধি গনের ভিতরে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

এ নিয়ে উপজেলা পরিষদ, প্রশাসন সহ সকল মহলে বিশেষ করে জন-প্রতিনিধিদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তার এমন একলা চলো নীতিতে সরকারের চলমান উন্নয়ন প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার অবহেলিত জনগন।
পাড়ইল ইউ’পি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুজিব জানান, আমাদের সাথে সমন্বয় না করেই, নিজের মন গড়া সিদ্ধান্তে ভূমিহীনদের বাসস্থান স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এতে ভূমিহীনদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক সুফিয়ান সাথে কথা হলে তিনি জানান, পরিত্যক্ত ভবনে আমি আছি আমার সমস্যা আমি বুঝব এবং সরকারি কোনো অর্থ ওই ভবনে খরচ করা হয়নি,আমার নিজস্ব অর্থায়নে খরচ করেছি ।আমার বসবাসের স্বাধীনতা আমার এই বলে এড়িয়ে যান।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান (পিএএ) জানান, বিষয়টি শুনেছি,নিয়ামতপুর উপজেলা যাব তদন্ত সাবেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।