বগুড়ার শিবগঞ্জে মসজিদের কমিটি নিয়ে দ্বন্দে ইউপি সদস্যসহ আহত ১২, আটক ৯

বগুড়ার শিবগঞ্জে মসজিদের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইমাম ও ইউপি সদস্যসহ ১২ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার জুমআর নামাজের সময় উপজেলার আটমুল ইউনিয়নের রামেরকান্দি চককানু শাহী জামে মসজিদে এঘটনা ঘটে। এঘটনায় ঐ এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

স্থানীয়রা জানান, চককানু শাহী মসজিদের ঈমাম ও মুয়াজ্জিন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মনোয়ার ও ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলামের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এছাড়া মসজিদ পরিচালনার জন্য ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে ঐ দু’পক্ষের মাঝে মতবিরোধ চলছিলো।

শুক্রবার জুমআতুল বিদার ফরজ নামাজের পর স্থানীয় ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম মসজিদের কমিটি গঠনের বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গেলে মনোয়ারের পক্ষের লোকজন তাতে বাঁধা প্রদান করে। এসময় উভয় পক্ষের মাঝে বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে মারামারি শুরু হয়। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিনিত হয় মসজিদ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ঈমাম কথা বললে তাকেও মারপিট করা হয়। এসময় দেশীয় অস্ত্র,রড ও বাশের লাঠি দিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম ও ঈমাম মাওঃ মাজেদ আলীসহ উভয় পক্ষের ১২ জন আহত হন।

এঘটনায় আহত ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম (৪০), ঈমাম মাওঃ মাজেদ আলী, আনিছার রহমান (৪০) আব্দুল মোত্তালেব (৫৫), আবু সাঈদ (৪৫), আব্দুল বাছেদ (৪৫), জয়নাব বেগম (৬২), মিনারা বেগম (৫৫), ফুলি বেগম (৩৫), সোহাগ (২৮), সফু (৪০) ও মনোয়ার হোসেন (৪০) হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষের ৯জন কে আটক করে। আটকৃতরা হলেন রামকান্দি গ্রামের আহম্মেদ আলী’র ছেলে আবু তালেব (৬৫), মৃত: জোব্বার এর ছেলে শাহজাহান (৫০), গোলাম ইয়াছিন এর ছেলে রুহুল আমিন (৩৮), জোব্বার আলীর ছেলে ইসারত আলী (৫৫), জোব্বার আলীর ছেলে গোলাম মোস্তফা (৪০), চককানুগ্রামের মৃত: বুলু মিয়ার ছেলে আব্দুল হাকিম (৫০), আবু সালেম এর ছেলে সেলিম (১৮), বুলু মিয়া ছেলে বিশা (২২), মৃত: কছির উদ্দিন এর ছেলে খোরশেদ আলী (৬৫)।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আটমূল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জহুরুল ইসলাম জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোয়ার ও তার লোকজন আমার বিপক্ষে ভোট করেছে। আমি নির্বাচনে জয়ী হবার পর থেকে নানা ভাবে আমার সাথে শত্রæতা করছে তারা। আমি মসজিদের কমিটির বিষয়ে জুময়াতুল বিদার ফরজ নামাজের পর বক্তব্য দিতে গেলে মনোয়ারের নেতৃত্বে মামুন, হেলাল, মিম বাবু,শাহ আলম, মাসুদ, তৌহিদ, কাদের, সোহাগ, মজনুসহ বেশ কয়েকজন আমার ও আমার সমর্থকদের ওপর হামলা করে।

এ ব্যাপারে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মনোয়ার হোসেন জানান, এই মসজিদ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ইউপি সদস্য জহুরুল নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর থেকে মুসল্লীদের কথা বার্তা তোয়াক্কা না করে নিজের ইচ্ছে মতো মসজিদ পরিচালনা করতে গিয়ে মুসল্লিদের সাথে মনোমানিল্যতা সৃষ্টি হয়। আজ আবার কমিটি নিয়ে কথা বলতে গেলে মুসল্লিরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে সংঘর্ষ বাঁধে।

এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক কুমার দাস বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৯জন গ্রেফতার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনো কোন পক্ষই লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে মামলা নেওয়া হবে।