বগুড়ার শিবগঞ্জে অযোগ্য ব্যক্তিকে অধ্যক্ষ নিয়োগের পায়তারা

সম্প্রতি অধ্যক্ষ পদে ১ম বার জনবল চেয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিবগঞ্জ উপজেলার আটমূল ইউনিয়নে সাধুরিয়া রহমানিয়া আলিম মাদ্রাসা। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক অধ্যক্ষ পদে আবেদন করেন উপজেলার কিচক ইউনিয়নের শোলাগাড়ী শাহ লস্কর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ আব্দুল গফুর।

নিয়োগের জন্য নিয়োগ বোর্ড গঠিত হলেও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পূর্ব নির্ধারিত অধ্যক্ষ প্রার্থী মোঃ আব্দুল গফুর পরীক্ষায় মোট ছয় নম্বার পেয়ে অকৃতকার্য হয়। সে সময়ের নিয়োগ বোর্ডের ডিজি’র প্রতিনিধি বি.এম.ই.টি.আই গাজিপুর ঢাকার অধ্যক্ষ মাহমুদুল হাসান নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয়।

পরবর্তীতে একই পদে জনবল চেয়ে ২য় বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ঐ মাদ্রাসাটি। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক আগামী ২৩শে মার্চ নিয়োগ বোর্ডের দিন ধার্য্য করা হয়েছে। এতে ডিজি’র প্রতিনিধি রাখা হয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অর্থ) আবুল বাশারকে। ২য় বার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক অধ্যক্ষ পদে আবেদন করেছে ৮ প্রার্থী।

এর মধ্যে কয়েকজন প্রার্থী এখনও নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রবেশপত্র পায়নি। এবারও প্রায় ৩০লক্ষ টাকার বিনিময়ে অযোগ্য আব্দুল গফুরকে নিয়োগ প্রদানের চেষ্টা করছে মাদ্রাসাটির নিয়োগ বোর্ডের একাংশ। এতে করে ঐ এলাকাবাসী ও মাদ্রাসাটির ম্যানেজিং কমিটির একাংশ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছে। তারা কোনভাবেও অযোগ্য আব্দুল গফুরকে নিয়োগ দিতে চায়না।

এবিষয়ে মাদ্রাসাটির ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান গত ১৮ই মার্চ বাদী হয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বগুড়া জেলা প্রশাসক, বগুড়া জেলার অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জিজি’র প্রতিনিধি, শিবগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ বোর্ড বন্ধ করার জন্য অভিযোগ দায়ের করেন।

এর আগেও গত ২ ফেব্রুয়ারী ম্যানেজিং কমিটির ৬জন সদস্য নিয়োগ বন্ধের জন্য মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বরাবর একটি আবেদন করেন। ঐ অভিযোগে বলা হয়, মাদ্রাসার সভাপতি আব্দুল গফুরসহ দুইজন প্রার্থীর নিকট থেকে অবৈধ নগদ অর্থ গ্রহণ করেন। সভাপতির এমন কর্মকান্ডে বর্তমান পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে। নিয়োগ বোর্ড বন্ধ না হলে এলাকায় এ নিয়ে সংঘর্ষের আশংখ্যা রয়েছে।

সাধুরিয়া রহমানিয়া আলিম মাদ্রাসা মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন, অধ্যক্ষ পদে প্রার্থী অযোগ্য আব্দুল গফুরসহ কয়েকজনের নিকট থেকে ৩০ লক্ষাধীক টাকার নিয়োগ বাণিজ্য করেছে ছামছুল আলম তালুকদারের যোগসাজশে তার সহধমির্নী ঐ প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান সভাপতি জয়নাব বানু। টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দিলে মাদ্রাসাটি মুখ থুবরে পরবে। মাদ্রাসার কল্যাণে এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ রক্ষার্থে আমরা চাই একজন যোগ্য ও সৎ ব্যাক্তিকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হোক।

অধ্যক্ষ পদে আবেদন করা প্রার্থী গাংনগর দাখিল মাদ্রসার সুপার মাওঃ আব্দুল ওহাব জানান, বিধি মোতাবেক নিয়োগ পরীক্ষার ৭দিন পূর্বে প্রার্থীদের মাঝে পরীক্ষার প্রবেশ পত্র বিতরণ করার নিয়ম। আামকে আজ পর্যন্ত নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেওয়া হয়নি।

মাদ্রসার ভারপ্রাপ্ত সুপার রেজাউল করিম বলেন, বিধি মোতাবেক আমরা নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। সকল অধ্যক্ষ প্রার্থীদের পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র বিতরণ করা হয়েছে।

মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি জয়নাব বানুর স্বামী ছামছুল আলম তালুকদার বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমাদের সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য একটি মহল উঠেপরে লেগেছে। বোর্ডের নিয়ম অনুসারে আমরা সঠিকভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়েছি।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, এ সংক্রান্ত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।