বাগেরহাটের শরণখোলায় বিলুপ্তির পথে কামার শিল্প

গ্রামীণ প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী কামার শিল্প নানা সংকটে আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাব, কারিগরদের মজুরী বৃদ্ধি, তৈরি পণ্যসামগ্রী বিক্রয় মূল্য কম, কয়লার মূল্য বৃদ্ধি, চরম আর্থিক সংকট , উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা কম থাকায় ও বিভিন্ন প্রতিকুলতার কারণে শরণখোলার কামার শিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে এখন তাদের ব্যস্ততা বেড়েছে অনেক।

দিনরাত সমান তালে লোহার টুং টাং শব্দে মুখরিত হয়ে উঠেছে শরণখোলা উপজেলার প্রতিটি কামার শিল্পীগন । কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কামার শিল্পীরা দা, বটি, চাকু, দাসা, চাপাতি সহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি তৈরি করতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে কামারদের দোকানে কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে দা, বঁটি, চাকু, চাপাতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করছেন। এসব ব্যবহার্য জিনিস স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারি ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাজার থেকে লোহা কিনে সেগুলো পুড়ে দা, বঁটি, চাপাতি, চাকুসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করছেন কামাররা। বর্তমান আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে এ শিল্প।

কামার শিল্পী বাদল সিকদার বলেন, বংশ পরসপর আমরা এই কাজ করে আসছি আমাদের পূর্ব পুরুষরা এ কাজ করতেন। আগে দেখতাম সারা বছর আমার বাব দাদারা এই কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতো কিন্তু এখন সারা বছর তেমন কোনো কাজ না থাকলেও কোরবানির সময় আমাদের কাজের চাহিদা বেড়ে যায়।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন কামার পরিবার খেয়ে না খেয়ে পৈতিক পেশা ধরে রেখেছে। কামার শিল্পীরা আরো জানান, বাপ—দাদার পেশা ধরে রাখলেও চাহিদানুযায়ী সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
পশুর হাট গুলোয় ঈদের আমেজ থাকলেও এখনও কামারদের দোকানে মানুষের পদ চারনা নেই বললেই চলে। তবে শেষ মুহুর্তে কোরবানীর মাংস কাটার সরংজামাদি কিনতে কামারদের কাছে ভিড় জমাবে মানুষ এমন আশায় বুক বেধে আছে কামার পরিবার গুলো।