শরণখোলায় ভেজাল মধু তৈরি চক্রের হোতা আবু সালেহ খলিফাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা

বাগেরহাটের শরণখোলায় ভেজাল মধু তৈরীর অভিযোগে আবু সালেহ খলিফা (৪২) নামে এক যুবককে স্থাণীয় মেম্বার ও এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের সুন্দরবন সংলগ্ন বগী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ভেজাল মধূ তৈরীর সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য রিয়াদুল পঞ্চায়েত ও এলাকার লোকজন তাকে আটক করে।

পরে রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্টে্রট জাহিদুল ইসলাম আবু সালেহ খলিফাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে।

বগী গ্রামের ইউপি সদস্য মো. রিয়াদুল পঞ্চায়েত জানায়, দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ চক্র পৃথিবীর অন্যতম ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবনে খাটি মধুর অন্তরালে ভেজাল মধু তৈরি করে ঢাকা, চট্টগ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকায় পাচার করে আসছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার বগী গ্রামের ভেজাল মধু তৈরির হোতা আবু সালেহকে রবিবার রাত তিনটার দিকে স্থানীয়দের সহযোগীতায় তার নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে তার ঘর তল্লাসী চালিয়ে ভেজাল মধু তৈরি করার বিভিন্ন সরঞ্জাম, আধা মন চিনি ও ২০ কেজি ভেজাল মধু পাওয়া যায়। তিনি আরও জানান এসকল মধু তৈরি করতে তিনি বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করে আসছে। যা মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

এ ব্যাপারে সুন্দরবন থেকে মধু সংগ্রহকারী দক্ষিণ সাউথখালী এলাকার বাসিন্দা ইউনুস হাওলাদার বলেন, এ সকল চক্রের কারনে আসল মধু বিক্রি করতে অনেক সময় সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া সুন্দরবনের মধুর যে ঐতিহ্য রয়েছে তা ক্ষুন্ন হচ্ছে। তাই তিনি আবু ছালেহর মত আরও অনেক ভেজাল মধু তৈরি করার কারিগর রয়েছে এলাকায়। তাদের খুজে বের করার জন্য প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বগী গ্রামের এক মৌয়াল বলেন অনেকেই এ ব্যবসার সাথে জড়িত যখন ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যা হয় তখন দু—একটি তথ্য প্রকাশ করে। তবে এ চক্রের সাথে অনেক রাগব বোয়াল জড়িত রয়েছে। তার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ভেজাল মধু পানিতে ফেলে দেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্টে্র মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ভেজাল মধু তৈরীর অপরাধে আবু সালেহ খলিফাকে পুলিশ তার কাছে সোপর্দ করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৫০ ধারা মতে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের কর্মকান্ডে জড়িত হবেন না এমন অঙ্গীকার করলে ও জরিমানা পরিশোধ করায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।