ময়মনসিংহের গৌরীপুরে বিনামূল্যে চক্ষু ক্যাম্প, চশমা ও ঔষধ বিতরণ

সকালে বাড়ির সামনে রোগীদের ভিড়। কেউ রোগীর সিরিয়াল দিচ্ছেন, কেউ দিচ্ছেন ব্যবস্থাপত্র, কেউ চোখ পরীক্ষা করছেন, কেউ বিতরণ করছেন চশমা ও ঔষধ। এমন দৃশ্য দেখা গেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) উপজেলা সদরে ভালুকা গ্রামে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিপরীতে সিদ্দিকিয়া চক্ষু ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ ফ্রি ক্যাম্পের আয়োজন করেন ও রোগী দেখেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. মাহমুদুল হাসান ছিদ্দিকী (শিবলী) ও তিন সদস্যের মেডিকেল টীম। মেডিকেল টীমের একজন রোগীদের প্রয়োজনমতো চশমা দিচ্ছেন, অন্য আরেকজন দিচ্ছেন প্রয়োজনমতো পরামর্শ। ডাক্তারের চাচা মতিউর রহমান ছিদ্দিকী বাড়ির বারান্দায় বসে ব্যবস্থাপত্র দেখে দিচ্ছেন চোখের ড্রপ ও ঔষধ।

জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ মেডিকেল কলেজ এর চক্ষু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হাসান ছিদ্দিকী (শিবলী) এলাকার ৫ শতাধিক রোগীকে ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা সেবা ও চশমা এবং ঔষধ বিতরণ করছেন।

চিকিৎসা নিতে আসা শচীন্দ্রনাথ বিশ^াস বলেন, বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা প্রদান করা হবে মাইক শুনে আমি চিকিৎসা নিতে এসেছি। ডাক্তারের ভিজিট দিতে হয়নি, ফ্রি চশমা ও ঔষধ পেয়েছি। এই চিকিৎসাটা বাইরে কোন হাসপাতালে নিলে ডাক্তারের ভিজিট, চশমা ও ঔষধ মিলিয়ে অনেক টাকা লাগতো। বিনামূল্যের এই চিকিৎসা সেবা পেয়ে আমি খুশি।

চোখ দেখাতে আসা ছফুরা খাতুন জানান, আমি চোখে ঝাপসা দেখি, চোখ দিয়ে পানি পড়ার সমস্যা নিয়ে ডাক্তার দেখাতে আসি। এলাকার ডাক্তার শিবলী আন্তরিকতার সাথে চোখ দেখে ব্যবস্থাপত্র করে দিয়েছেন, চশমা ও ঔষধ দিয়েছেন।

স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন বাচ্চু বলেন, অনেকেই ডাক্তারি পাশ করার পর শহরে রোগী দেখেন, এলাকার প্রতি তাদের কোন দায়িত্ব থাকে না। কিন্তু ডা. শিবলী দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় বিনামূল্যে চোখ পরীক্ষা করে ব্যবস্থাপত্র, চশমা ও ঔষধ প্রদান করে যাচ্ছেন। এটি তাঁর একটি মহতি উদ্যোগ।

প্রফেসর ডা. মাহমুদুল হাসান ছিদ্দিকী (শিবলী) জানান, এলাকার দরিদ্র মানুষকে সেবা দেয়ার লক্ষ্যেই ১৯ বছর যাবত চক্ষু সেবা দিয়ে আসছি। আগে শুধু ব্যবস্থাপত্র দিতাম, চাকরি হওয়ার পর থেকে ব্যবস্থাপত্রের পাশাপাশি বিনামূল্যে চশমা ও ঔষধ বিতরণ করছি। এই চিকিৎসাসেবা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য যে, প্রফেসর ডা. মাহমুদুল হাসান ছিদ্দিকী (শিবলী) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ২০০২ সালে এমবিবিএস পাশ করে ২০০৪ সালে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। ২০০৭ সালে তিনি ডিপ্লোমা অপটোনোলজির প্রশিক্ষণ নিয়ে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে যোগদান করেন। ২০০৮ সালে ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালের জামালপুর শাখায় চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও পরিচালক হিসেবে যোগ দেন।

২০১০ সালে তিনি সিবিএমসিবি হাসপাতাল, ময়মনসিংহে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ও ২০১৮ সাল থেকে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগি অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি ২০১৮-১৯ সালে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে রেটিনা বিষয়ে লংটার্ম ফেলোসিফ অর্জন করেন।