মাছ শিকার করে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা!

মৎস্য শিকারে টানা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা, হতাশায় জেলেরা

সারা বছরজুড়ে ছিলো রুপালী ইলিশের আকাল আর পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেদের আগ্রাসন। এরই মাঝে মৎস্য শিকারে কয়েকদফা নিষেধাজ্ঞায় দক্ষিনের বৃহৎ মৎস্য বন্দরগুলোতে এখন বিরাজ করছে হতাশা।

সমুদ্রগামীদের অভিযোগ, বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় অপ্রতুল সরকারী খাদ্য সহায়তায় মিটছে না পরিবারের আর্থিক চাহিদা। ফলে টানা ৬৫ দিনের অবরোধে আর্থিক সঙ্কট ঘোচাতে পেশা পরিবর্তন করে ভিন্ন পেশায় ঝুকছেন জেলে পল্লীর অনেক বাসীন্দারা।

জৈষ্ঠ্য’র প্রথম দিকে ইলিশ মৌসুমের এই সময়ে জাল, ট্রলার মেরামত শেষে সরঞ্জাম নিয়ে সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেয় জেলেরা। আর মৌসুমের শুরুতেই প্রতি বছরই ২০ মে মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের মৎস্য আহরনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। সমুদ্রে মৎস্য প্রজাতির প্রজনন কালীন এ সময়ে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জেলে পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হলেও পরিবারে আর্থিক সঙ্কট মিটছে না বলে অভিযোগ মৎস্য শিকারিদের।

শুধু তাই নয় অবরোধ কালীন সময়ে দেশের সমুদ্র সীমানায় প্রবেশ করে অবাধে মাছ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা। আর দীর্ঘসময় অপেক্ষার পর অবরোধ কাটিয়ে সাগরে ফিরলেও কাংঙ্খিত মৎস্য আহরণ সম্ভব নয় বলে হতাসা প্রকাশ করছেন অনেক জেলে। ফলে বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় এখন বাধ্য হয়েই পেশা পরিবর্তন করতে চাইছেন এ জনগোষ্ঠীর অনেক সদস্যরা।

পটুয়াখালীর মহিপুর সদর ইউপির জেলে বাদশা মিয়ার অভিযোগ, লাগাতার ৬৫ দিনের অবরোধ দিলে আমরা বেকার হয়ে যাই। তবে সরকারের পক্ষ থেকে যে প্রনোদনা দেয়া হয় তা দিয়ে সংসারের অভাব মিটানো সম্ভব নয়। এখোন করোনার মধ্যে অবরোধে না খেয়ে মরতে হবে।

লালুয়া ইউপির ইলিশ শিকারি খলিল মিয়া জানান, আমাদের দেশে যে সময়টাতে ইলিশের দেখা মেলে সেই সময়টাতেই অবরোধ থাকে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা ঠিকই মাছ শিকার করে নিয়ে যায়।

কুয়াকাটার জেলে শিপন হাওলাদার জানান, দীর্ঘসময় ধরে সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া নিষেধাজ্ঞায় আমাদের জেলেদের পরিবারে দুঃখ কষ্টের খড়গ নেমে আসে। করোনার মধ্যে বিকল্প কর্ম খুজেঁ পাওয়াটাও কঠিন।
তাই রাস্ট্র পক্ষের কাছে আর্থিক সুবিধা পাওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।

কুয়াকাটা-আলীপুর মৎস্য বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা জানান, সরকার ঘোষিত অবরোধ শতভাগ মেনে চলতে ইতো মধ্যেই সভা করা হয়েছে। তবে পাশ্ববর্তী দেশের সাথে সংহতি রেখে অবরোধ দেয়া এখন সময়ের দাবী। এছাড়া জেলেদের কথা চিন্তা করে করোনার মধ্যে অবশ্যই জেলেদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করার অনুরোধ জানাচ্ছি।