পটুয়াখালীর উপকূলে শরীর সুরক্ষায় গরম কাপড়ের দোকানে উষ্ণতার খোঁজ

চলমান শৈত্যপ্রবাহে সকাল থেকে সূর্যের দ্যাখা না মেলায় দক্ষিণে জেঁকে বসেছে শীত। বসত ঘরে কম্বল মুড়িয়ে শীত নিবারণ হলেও বাহিরে বাতাসে বয়ে চলা শীতালতায় কাবু হয়ে পড়ছেন সব বয়সীরা। তবুও কর্মব্যস্ততায় অসহনীয় ঠান্ডা উপেক্ষা করেই গন্তব্যে ছুটছেন সকল শ্রেনী পেশার মানুষ। তবে প্রকৃতিতে নেমে আসা এই শীত মৌসুমে রক্ত হীম করা বায়ূ থেকে শরীর উষ্ণ রাখতে গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। তাই উপকূলে স্বল্প মূল্যের ভ্রাম্যমান কাপড় বিক্রির দোকানগুলোতে চলছে পছন্দের পোশাক বাছাইয়ের প্রতিযোগীতা।

দেশের সর্বদক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার পৌর শহরে মিনি মার্কেট এলাকায় এখন গরম পোশাক কিনতে শতাধিক মানুষের ভিড়।

এদিন মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) হাটের দিন হওয়ায় ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। এই বাজারে সমান তালে উষ্ণতার খোঁজ করছেন হাটে আসা নারী—পুরুষেরা। বিশেষ করে শিশু এবং বয়ষ্কোদের জন্য গরম কাপড় খোঁজ করতে দ্যাখা গেছে ক্রেতাদের। তবে ত্রেতা উপস্থিতি হওয়ায় বেশ দাম হাকাচ্ছেন দোকানীরা।

এই হাটে সোয়েটার কিনতে আসা আলম জানান, তিনি চাকামইয়া ইউনিয়ন থেকে নিজের জন্য পোশাক কিনতে এসছেন। রাতে প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যে হোন্ডা চালাতে বেগ পেতে হচ্ছে তার। তাই ৩৫০ টাকায় একটি সোয়েটার নিয়েছেন তিনি। তার ভাষ্যমতে গাউনের এসব দোকানে মোটা কাপড় পাওয়া যায় কম দামে তাই কিনেছেন তিনি।

লালুয়া থেকে পোশাক কিনতে আসা জেলে বধূ আমেনা জানান, তার দুই সন্তান এবং বৃদ্ধ শাশুড়ির জন্য টুপি,মোজা এবং উলের পাজামা খোঁজ করছেন তিনি। সাধ্যের মধ্যে দাম কষলেই কিনে নিবেন তিনি। তবে একাধিক ক্রেতারা বলছেন, বাজার উর্ধমূখি হওয়ায় শীতের পোশাকেও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে অনেক।

এই হাটে বাকেরগঞ্জ থেকে এসে দোকান সাজিয়ে বসেছেন দুলাল গাজী। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে শীত বেড়ে যাওয়ায় তার দোকানে বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুন। তবে গত বছরের তুলনায় এবছর পোশাকের পাইকারী বাজারে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতাদের মন জয় করতে পারছেন না। তিনি বলেন, আগে জ্যাকেটের গাইড প্রতি মূল্য ছিল ১৩ হাজার টাকা। তবে এই বছর তা কিনতে হয়েছে ১৬ হাজার টাকায়। আমতলী থেকে আসা বিক্রেতা সাঈদুল ইসলাম বলেন, তার টুপি, মোজার দোকানে সকাল থেকেই ভিড় করছেন ক্রেতারা। তবে ১২০ টাকায় টুপি আর ২০ থেকে ৩০ টাকায় মোজা কিনতে আসা ক্রেতাদের সংখ্যাই বেশি।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাটে বাছাই করে পছন্দের পোশাক হাতে নিয়ে দাম কষাকষি করছেন শতাধিক মানুষ। কলাপাড়া পৌর শহর বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, কলাপাড়ার মিনি মার্কেটে এই গাউনের পোশাক বিক্রি হচ্ছে যুগ যুগ ধরে। ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীরা এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষেরা এই বাজার থেকে পোশাক কিনে তাদের শীত নিবারণ করতে পারেন।