সম্প্রীতির নজির : বৌদ্ধ মন্দির থেকে ইফতার বিতরণ

প্রতিবছর রাজধানীর বাসাবো বৌদ্ধ মন্দির থেকে ইফতার বিতরণ করা হয়। এই মন্দির থেকে ইফতার দেওয়া হয় এলাকার সব দুস্থ ও গরিবদের। রোজার মাসে এই এলাকার গরিব মানুষের ভরসাই যেন বৌদ্ধ মন্দির।

ইফতার নিতে আসা সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘জানি রোজা শুরু হলেই বৌদ্ধ মন্দির থেকে ইফতার পাবো। তাই ইফতার নিয়ে চিন্তা করি না। রোজার মাসে একটু ভালো ইফতারের আশায় এই মন্দির থেকেই ইফতার নিই। শুধু আমি একা নই। এই এলাকার সব গরিব মানুষের ভরসা এই মন্দির।’

ভিন্ন ধর্মের মানুষের উপাসনালয় থেকে ইফতার নিতে খারাপ লাগে না প্রশ্নে সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘দুনিয়াজোড়া মানুষের রক্ত যেমন একই রকম লাল, খাবারও একই রকম। আর ধর্মতো আমারে নিষেধ করেনি অন্য ধর্মের মানুষের কাছ থেকে ইফতার নিতে।’

সুফিয়া খাতুনের কথা শুনে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বৌদ্ধ মন্দির এলাকার বাসিন্দা প্রান্ত বলেন, ‘আমরা সারা বছর অপেক্ষা করি রোজার মাসের জন্য। এ যেন আমাদের অন্যরকম উৎসব। নিজেদের হাতে আমরা পেঁয়াজু, বেগুনি ভাজি, ছোলা রান্না করি। সেগুলো প্যাকেট করি। রোজা শেষ হলে আমাদেরও মন খারাপ হয়।’

বৌদ্ধ মন্দির থেকে মুসলিমদের যারা ইফতার দিচ্ছেন এবং যারা নিচ্ছেন সবাই প্রায় স্থানীয় লোকজন। শুক্রবার (৯ জুন) সরেজমিনে বাসাবো সবুজবাগের ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহামন্দিরে এ চিত্র দেখা গেছে। এখানে যারা ইফতার সরবরাহ করছেন এবং যারা নিচ্ছেন তারা সবাই বলছেন, এটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির। এখানে ধর্মের কোনও ভেদাভেদ নেই।

বাসাবো এলাকার আবেদা বেগম, শাজাহানপুরের কমলা খাতুন, হোসেন আরা বেগম, আবুল হোসেন, লিয়াকত আলীসহ এই এলাকার খেটে খাওয়া মানুষেরা জানান, শুধু এই ইফতারই নয়, ঈদের আগে ইফতারের সঙ্গে আরও অনেক কিছুই দেওয়া হবে। শাড়ি, লুঙ্গি ও জামাও দেওয়া হবে ঈদের জন্য। পোলাও চাল, সেমাই, চিনিও দেওয়া হবে।