সম্মানিত আশূরা শরীফ উনার বেমেছাল ফযিলত

সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য।সাইয়্যিদুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম হুযুর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরুদ শরীফ ও সালাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা তওবা শরীফ উনার ৩৬ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত কিতাব উনার মধ্যে আসমান-যমীন সৃষ্টির শুরু থেকে গণনা হিসেবে মাসের সংখ্যা ১২টি।

তন্মধ্যে ৪টি হচ্ছে হারাম বা সম্মানিত মাস। এটাই সঠিক দ্বীন। তোমরা এই মাসগুলোতে নিজের প্রতি জুলুম করো না”।এই মাস সমূহ উনাদের যথাযথ সম্মান-ইজ্জত বজায় রাখতে হবে এবং এই মাসগুলোতে নফসের প্রতি জুলুম করা যাবেনা অর্থাৎ হারাম-নাজায়েজ কাজ করা যাবেনা। হারাম মাস সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ করেন-অর্থ: হারাম মাসসমূহ উনাদের মধ্যে তিনটি হলো ধারাবাহিক। তা হল- পবিত্র জিলক্বদ শরীফ, পবিত্র জিলহজ্জ্ব শরীফ ও পবিত্র মুহররম শরীফ।

আর চতুর্থটি হল মুদ্বার গোত্রের পবিত্র রজব শরীফ মাস; যা পবিত্র জুমাদাল উখরা শরীফ এবং পবিত্র শাবান শরীফ মাসের মধ্যবর্তী মাস। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবু দাউদ শরীফ) এই চারটি সম্মানিত মাস উনাদের মধ্যে অন্যতম মাস হলো পবিত্র মুহররম শরীফ। মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন-অর্থ: “তোমরা পবিত্র মুহররম শরীফ মাস উনাকে সম্মান করো। যে ব্যক্তি মুহররম শরীফ মাস উনাকে সম্মান করবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাত নছীব করে এবং জাহান্নাম থেকে নাজাত দিয়ে সম্মানিত করবেন”। সুবহানাল্লাহ! (ইবনে মাজাহ শরীফ)আরো বর্ণিত,

অর্থ: “তোমরা মুহররম মাসের পবিত্র পবিত্র আশূরা শরীফ উনাকে সম্মান করো। যে ব্যক্তি মুহররম মাসের পবিত্র পবিত্র আশূরা শরীফ উনাকে সম্মান করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাত দিয়ে এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ দিয়ে সম্মানিত করবেন”। সুবহানাল্লাহ! পবিত্র আশূরা শরীফ উনার সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উল্লেখ আছে।অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বপ্রথম আশুরা মিনাল মুহররমুল হারাম শরীফে দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন। আশুরা মিনাল মুহররমুল হারাম শরীফ উনার দিনেই আসমান থেকে সর্বপ্রথম রহমত মুবারক নাযিল করেন।

আসমান থেকে সর্বপ্রথম বৃষ্টি বর্ষণ করেন এই আশুরা মিনাল মুহররমুল হারাম শরীফ উনার দিনে”।এজন্য যে ব্যক্তি পবিত্র আশুরা মিনাল মুহররমুল হারাম শরীফ উনাকে তা’যীম-তাকরীম করবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে বেমেছাল ফযীলত দান করবেন।পবিত্র আশূরা শরীফ উনার আমলের ফযীলত সম্পর্কে অসংখ্য হাদীছ শরীফ বর্ণিত রয়েছে। নিম্নে কতিপয় হাদীছ শরীফ তুলে ধরা হলোঃপবিত্র পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে গোসল করা সম্পর্কেঃ পবিত্র হাদিছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ হয়েছে।

অর্থ: “যে ব্যক্তি পবিত্র আশুরা মিনাল মুহাররম শরীফ উনার দিন গোসল করবে তাকে সুস্থতা দান করা হবে। মৃত্যু ব্যতীত তার কোন কঠিন রোগ হবেনা এবং সে অলসতা ও দুঃখ-কষ্ট হতেও নিরাপদ থাকবে”। সুবহানাল্লাহ!চোখে ইসমিদ সুরমা দেয়া সম্পর্কেঃ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত।

অর্থ: “যে ব্যক্তি আশুরা মিনাল মুহাররমুল হারাম শরীফ উনার সম্মানার্থে এই দিনে চোখে মেশক মিশ্রিত ইসমিদ সুরমা দিবে বা ব্যবহার করবে, সেদিন থেকে পরবর্তী এক বছর তার চোখে কোনো রোগ হবে না”। সুবহানাল্লাহ! (মাক্বাছিদে হাসানাহ, শুয়াবুল ঈমান, দায়লামী, মা ছাবাতা বিসসুন্নাহ শরীফ) ইয়াতিমের প্রতি উত্তম আচরণ করা সম্পর্কেঃ পবিত্র হাদিছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে।

অর্থ: যে ব্যক্তি আশুরা মিনাল মুহাররমুল হারাম শরীফ উনার সম্মানার্থে কোন ইয়াতিমের মাথায় হাত বুলাবে, ক্ষুধার্তকে খাদ্য খাওয়াবে, পিপাসার্তকে পানি পান করাবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাতের দস্তরখানায় খাদ্য খাওয়াবেন এবং সালসাবিল ঝর্ণা থেকে পানি পান করাবেন। সুবহানাল্লাহ!

অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি এই উম্মতের কাউকে খুশি করানোর উদ্দেশ্যে তার প্রয়োজন পূরণ করলো, সে যেন আমাকেই খুশি করল। আর যে আমাকে খুশি করল, সে মহান আল্লাহ পাক উনাকেই খুশি করল। যে মহান আল্লাহ পাক উনাকে খুশি করল মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সুবহানাল্লাহ! (মিশকাত শরীফ)।