পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সাবেক প্রতিমন্ত্রীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে

১০কোটি টাকার অর্থ-সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ : দুদককে তদন্তের নির্দেশ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সরকারী মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের ১০ কোটি টাকার অর্থ-সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক প্রতিমন্ত্রীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

পটুয়াখালী সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক(ভারপ্রাপ্ত) একেএম এনামুল করিম মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) এ আদেশ প্রদান করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. শাহআলম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: নুরুল ইসলাম ও বাদী পক্ষের নিযুক্তীয় কৌশুলী অ্যাডভোকেট সহিদুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

জানাযায়, কলেজ শিক্ষার্থী মো. মিজানুর রহমান ২২ মার্চ সাধারন শিক্ষার্থীদের পক্ষে জনস্বার্থে বাদী হয়ে পটুয়াখালী সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান, সাবেক কলেজ অধ্যক্ষ দোলোয়ার হোসেন, অধ্যক্ষ লিয়াকত মোল্লা, উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার মনিরুজ্জামান খাঁনসহ অজ্ঞাত নামা ৮/৯ জনকে আসামী করা হয়।

মামলার বিবরনে জানা যায়, কলেজের উন্নয়নে ২০১৩, ২০১৪ সালে পিআইও অফিস ও ডিসি অফিস থেকে সরকারী অনুদান প্রাপ্ত ১ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা, কলেজ উপাধ্যক্ষ বাসগৃহের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করন প্রকল্পে ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে জেলা পরিষদ, পটুয়াখালী থেকে বরাদ্দকৃত ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, অধ্যক্ষ কোয়াটার মেরামত ও সংস্কার প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, কলেজে অডিটোরিয়াম নির্মাণের জন্য ২০ লক্ষ টাকার কাজে অনিয়ম, কলেজের শ্রেনিকক্ষ উন্নয়ন ও আসবাবপত্র মেরামত ও সংস্কারের ২ টন চাল, কলেজ জামে মসজিদ, ছাত্রাবাস, ছাত্রাবাস কিচেন ও শিক্ষক ম্যাচ সংস্কার এবং মেরামত প্রকল্পের জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত ৪ লক্ষ সরকারী অনুদানের টাকা আসামীরা আত্মসাত করেছেন। এছাড়া পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে ৩ তলা বিশিষ্ট সাইক্লোন সেন্টার ও দ্বিতল টিন সেট ব্যবহার যোগ্য অধ্যক্ষ কোয়াটার বিক্রী করে ১৭ লক্ষ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র ফি’র ৩ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা, অনার্স শাখার বিভিন্ন বিভাগের ৪০ লক্ষ টাকা আসামীরা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে আত্মসাত করেছেন।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, কলেজের কৃষি জমি একসনা লিজ প্রদানের মাধ্যমে ও কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত প্রকৃত অর্থ ব্যাংকে জমা না দিয়ে আংশিক জমা দিয়ে অধিকাংশ অর্থ হাতে রেখেছেন আসামীরা। যা এপর্যন্ত প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা। এছাড়া আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে অবৈধ অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ঘুষ দুর্নিতির মাধ্যমে কলেজে নিয়োগ বানিজ্য করে কাম্য যোগ্যতা না থাকার পরও জাল সনদে অনেক ব্যাক্তিকে চাকরি দিয়েছেন। যা মাউশি ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের তদন্তের প্রতিবেদন সহ জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় এর প্রতিবেদনে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের সকল বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে।

এভাবে আসামীরা অজ্ঞাত আরও ৮/৯ জন আসামীর পরস্পর যোগসাজশে সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পদ ও অর্থ আত্মসাত করেছেন। এ বিষয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মাহাবুবুর রহমানের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা সম্ভব হয়নি।

তবে উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার মনিরুজ্জামান খাঁন বলেন, এক কলেজ শিক্ষক আমাকে ফোন করে বলেছেন যে আমার নামে মামলা হয়েছে। তবে আত্মসাতের বিষয়ে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।