এবার মায়ের লাশ দাফন না করে সম্পত্তির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বে সন্তানেরা!
চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমি ভাগ বাটোয়ারার জের ধরে মায়ের দাফন কাজে বাধা দিয়েছে দুই ছেলে। অবশেষে মৃত্যুর ৯ ঘণ্টা পর জনপ্রতিনিধির সহায়তায় লাশ দাফন করা হয়।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বারোঘরিয়া ইউনিয়ের জামাদার পাড়ার গুড়িপাড়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুর ১২টায় বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত শাজাহানের স্ত্রী তারাফুল বেগম (৪০) মারা যান। এসময় বাড়ির উঠানে লাশ রেখেই সম্পত্তির মাত্র ৯ শতক জমির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হন তার দুই ছেলে।
সম্পত্তির সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত লাশ দাফনেও বাধা দেন তারাফুল বেগমের দুই ছেলে সাদিকুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম।
স্থানীয়রা আরও জানান, তারাফুল বেগমকে তার ছেলেরা দেখভাল না করায় বেশ কিছুদিন থেকে তিনি তার মেয়ে শিরিনের বাড়িতে থাকতেন। ফলে তনি ৯ শতক জমির মধ্যে ৪ শতক জমি মেয়ের নামে লিখে দেন। কিন্তু সোমবার তিনি মারা গেলে ৯ শতক জমির সমান ভাগে ভাগ করাকে কেন্দ্র করেই লাশ দাফন কাজে বাধা দেয় ছেলেরা।
পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির বৈঠকে বসে রাতে লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই ছেলে সাদিকুল ও শফিকুল জানান, ‘আমার মা আমাদের বাড়িতেই থাকলে ভালো থাকতেন। আমরা দেখভাল করি। কিন্তু হঠাৎ মাকে জোর করে শিরিন তার বাড়িতে নিয়ে চলে যায়। সেখানে গিয়ে চিকিৎসার অভাবে আমার মা মারা গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে মা ছোট বোন শিরিনের কাছে থাকতেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সে মায়ের কাছ থেকে সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়েছে।’
তবে শিরিন বেগম অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ‘দীর্ঘদিন আগে বাবা মারা গেছেন, তারপর থেকে মায়ের ভরণপোষণ আমি চালিয়েছি। মাকে কোনোদিন আমার ভাইয়েরা দেখতে আসেনি। এমনকি কোনদিন মায়ের খোঁজ খবর নেয়নি। সেই কারণে মা প্রথমে ৩ শতক ও চোখের অপারেশনের খরচের জন্য ১ শতকসহ মোট ৪ শতক জমি আমাকে লিখে দিয়েছিলেন। কিন্তু মা মারা যাওয়ায় জমির লোভে এসে লাশ দাফনে বাধা দিয়েছে।’
এ বিষয়ে বারোঘরিয়া উনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফাইজুদ্দীন কালু বলেন, ‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। তবে ঘটনা শোনার পর জমি-জমার বিষয়টির সমাধান করে দেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করলে তারা লাশ দাফন করতে রাজি হয়। রাত ৯টার দিকে লাশ দাফন করা হয়।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ওসি মোজাফফর হোসেন জানান, ‘স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয় এবং পরে জনপ্রতিনিধির সহায়তায় লাশ দাফন করা হয়।’
উল্লেখ্য, অতিসম্প্রতি অনুরূপ ঘটনা ঘটে রাজধানী ঢাকার বাড্ডা এলাকায়। পিতার মৃত্যুর একদিন পরেও লাশ পরে ছিলো দুই ছেলের সম্পত্তি বিরোধে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন