কুড়িগ্রামে সূর্যমুখী চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় এ বছর ২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষাবাদ হয়েছে।
এ বছর উপজেলার ৮৫ জন কৃষকের মাঝে ১ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে।

কৃষি বিভাগের উদ্যোগের কারণে প্রচলিত ফসলের পাশাপাশি লাভজনক সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে সফলতার দিকে এগিয়ে চলেছেন উপজেলার কৃষকরা। সবুজ গাছের হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো মাঠ। এমন এক দৃশ্য যেন প্রকৃতিকে করেছে আরও রূপময়ী।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার পলাশবাড়ী হালমাঝিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক নুরল হক। এবার ১ একর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন যার গাছে ফুল ধরতে শুরু করেছে। প্রতিদিনই সৌন্দর্য পিপাসু অনেকেই আসছেন নুরল হকের সূর্যমুখী ফসলের মাঠে।

তিনি জানান, এর পূর্বে জমিতে ধান, ভুট্টাসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফসলের চাষ করতেন। কিন্তু গত বছর সদর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে সূর্যমুখী ফুলের বীজ ও সার পেয়ে চেরেঙ্গা এলাকার ২৫ শতক জমিতে তা আবাদ করেন। আবাদ করতে খরচ হয় প্রায় ৮ হাজার টাকা আর সূর্যমুখীর বীজ বিক্রি করেন ৩০ হাজার টাকায়। তাই এ বছর কৃষি অফিস থেকে বেশি পরিমাণে বীজ সংগ্রহ করে ১ একর জমিতে চাষ করছেন সূর্যমুখী ফুল।

তিনি আরও জানান, প্রতি বিঘা জমিতে বপনের জন্য ১ কেজি সূর্যমুখী বীজের প্রয়োজন হয় এবং খুবই কম মাত্রায় সার দিতে হয়। অন্যান্য ফসলের তুলনায় অনেক কম শ্রমে অধিক ফলন পাওয়া যায়। এ বছর আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে ৮০ থেকে ১০০ মণ ফসলের আশা করছেন তিনি, যা বাজারে বিক্রি করলে প্রায় ১ লক্ষ টাকা পাওয়া যাবে। এই টাকা দিয়ে সংসারের প্রয়োজন মিটিয়ে সঞ্চয় করার স্বপ্ন দেখছেন তিনি। তারমত অনেকে এখন এই রবিশস্য ও তেলবীজ জাতীয় সূর্যমুখী ফুল ও বীজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোছাঃ নাহিদা আফরীন বলেন, তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরিষা চাষের পাশাপাশি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষাবাদ হয়েছে। এ বছর ৮৫ জন কৃষকের মাঝে ১ কেজি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী বীজের বাজারজাত সহজতর করার লক্ষ্যে ‘তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প’ এর মাধ্যমে আমরা কাজ করছি।
কুড়িগ্রাম জেলার ৪২২ টি চরে সূর্যমুখী বীজের আবাদ ছড়িয়ে দিতে পারলে এবং উৎপাদিত বীজ বিপননের ব্যবস্থা থাকলে লাভবান হবে জেলার কৃষকরা।