খাগড়াছড়ির ৯ উপজেলায় টুং টাং শব্দে মুখরিত কামারশালা গুলো

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার টুং—টাং শব্দে ৯টি উপজেলায় কামারশালাগুলো মুখর হয়ে উঠছে। পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। তাই কর্মব্যস্ত থেকে যেন দম ফেলার ফেলার সময় নেই কর্মকারদের।

কোরবানির পশু জবাই এবং মাংস কাটার জন্য দিন—রাত একাকার করে খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলা, পৌর সভার কর্মকাররা ছুরি, চাকু, চাপাতি, দা ও বটি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আর এতে করে টুং—টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে সদর উপজেলা ও পৌর শহরের কামারশালাগুলো।

বৃহস্পতিবার(২২শে জুন) সদর উপজেলা ও মাটিরাঙ্গা পৌর শহরের বিভিন্ন কামারশালা ঘুরে দেখা যায়, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে চাহিদা বেড়েছে বিভিন্ন লোহার সামগ্রীর। ঈদকে সামনে রেখে বিদ্যুৎ ও কয়লার আগুনে রক্তিম আভা ছড়িয়ে লোহায় পড়ছে হাতুড়ির আঘাত। আঘাতে আঘাতে রূপ নিচ্ছে ছুরি, চাকু, চাপাতি, দা ও বটিসহ হরেক রকমের জিনিসপত্র।

অক্লান্ত পরিশ্রম করে শরীরের ঘাম ঝরিয়ে ছুরি, চাকু, চাপাতি, দা ও বটিতে রূপ দেওয়া এসব লৌহজাত বস্তুুতে শান দিচ্ছেন কেউ, কেউ বা আবার অন্য সহকর্মীর কাজে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কর্মকারদের তৈরিকৃত এসব লৌহজাত সামগ্রী বিশেষ করে ছুরি আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে।
খাগড়াছড়ি পৌরশহরের অনিক কর্মকার বলেন, ঈদের আরো বেশ কয়েক দিন বাকি। এখনো পুরো দমে ঈদের বিক্রি শুরু হয়নি। সময় যত এগিয়ে আসছে, দিন দিন আমাদের বেচা—বিক্রি তত বাড়ছে। এর মধ্যে শান দেওয়ার কাজ অনেকটা বেশি। সব মিলিয়ে সামনের দিনগুলোতে আরও বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছি।
মাটিরাঙ্গা বাজারের সনাতন কর্মকার বলেন, ঈদকে সামনে রেখে মানুষ আমাদের কাছ থেকে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নিচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় দাম তেমন বাড়েনি। ছুরির ধরন বুঝে দামের পার্থক্য রয়েছে। আকারভেদে ছুরি ১শত থেকে ৩শত টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

গত কয়েক বছর করোনার কারণে ব্যবসা খারাপ হলেও এ বছর আগের তুলনায় বিক্রি অনেকটা ভালো হবে আশা করছি।

কামারশালায় আসা মাটিরাঙ্গা পৌরসভার বাবু পাড়ার ক্রেতা আব্দুসলাম বলেন, ছুরির দাম অন্যান্যা বছরের চেয়ে একটু বেশি। একটি দা ও বডি একটি বটি ১৪শত টাকা দিয়ে কিনেছি।

কামার শালায় ছুরি ও দা কিনতে আসা তবলছড়ির মোস্তফা বলেন, আগের ছুরি ও দা পুরনো হয়ে গেছে। যার জন্য নতুন করে কিনতে এসেছি। জিনিসের দাম বেশি বিদায় পুরনোগুলোকে শান দিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
প্রিয়তোষ কর্মকার নামে আরেক কামারশালার সালিক বলেন, মাটিরাঙ্গা পৌর সভায় ৬টি কামারশালা রয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা জিনিষের দাম বাড়াইনি। আমাদের কোন সমিতি নাই। সমিতি না থাকলেও ঈদকে পুঁজি করে কেউ যেন ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম নিচ্ছে না।