তালিকা হস্তান্তরের পরদিনও দুই শতাধিক রোহিঙ্গার প্রবেশ

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে প্রাথমিকভাবে ৮০৩২ জনের তালিকা মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে শুক্রবার।

বাংলাদেশে আসা মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল কিউ সোয়ের কাছে ১ হাজার ৬৭৩ পরিবারের এ তালিকা হস্তান্তরের দিন টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে ৩২টি পরিবারের ১৩৬ জন রোহিঙ্গা।

পরের দিন শনিবার টেকনাফের হারিয়াখালী ত্রাণ কেন্দ্রের জড়ো হয় ৭২টি পরিবারের ২৮৩ রোহিঙ্গা। সাবরাং হারিয়াখালী ত্রাণকেন্দ্রে দায়িত্বরত জেলা প্রশাসকের (ডিসি) প্রতিনিধি ও টেকনাফ উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন নতুন আসা রোহিঙ্গাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত নতুন করে ৭২টি পরিবারের ২৮৩ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। এসব রোহিঙ্গাদের প্রথমে সেনাবাহিনীর হারিয়াখালী ত্রাণ কেন্দ্রে নেয়া হয়। এরপর মানবিক সহায়তায় প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, সুজি, চিনি, তেল ও লবণের একটি করে বস্তা দিয়ে গাড়িতে করে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও জানান, এর মধ্যে চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত ৩৮৬টি পরিবারের এক হাজার ৭২৭ জন রোহিঙ্গা এসেছে। তাদের টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শরণার্থী কেন্দ্রের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে পাঠানো হয়।

বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রাচিডং হাংডং গ্রামের আব্দুল গফফার ও নুরবাহার, বুচিডং পুইমালি গ্রামের মো. সালাম জানান, মংডু ঢংখালী নাফ নদের পাড়ে ১০ দিন অপেক্ষার পর শুক্রবার রাতে বাংলাদেশে পাড়ি জমিয়েছেন তারা। মিয়ানমারে নিজ বাড়িঘর থেকে উপার্জনাক্ষম সদস্যরা বের হতে না পেরে অনেককে অর্ধাহারে অনাহারে থাকতে হচ্ছে। মিলিটারির ভয়ে পাহাড়ে কাঠ সংগ্রহ, নদীতে মাছ ধরাসহ আয়-রোজগারের পথ বন্ধ রয়েছে। তাই সেখান থেকে পালিয়ে আসা ছাড়া আর কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বি-পাক্ষিক চুক্তি হয় গত ২৪ নভেম্বর। চুক্তির দুই মাসের মাথায় প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও দুই দেশের প্রস্তুতি না থাকায় প্রত্যাবাসন পিছিয়ে যায়। বাংলাদেশ সরকার ৮০৩২ জন রোহিঙ্গার তালিকা মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে শুক্রবার।