নরসিংদীর মনোহরদীতে ২১ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা পৌর কর্মচারী; গোপনে মীমাংসা

নরসিংদীর মনোহরদী পৌরসভার এক অফিস সহায়কের (পিয়ন) বিরুদ্ধে ২১ লাখ ৯১ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত তুহিন মনোহরদী পৌর এলাকার (৮ নং ওয়ার্ড) হাররদিয়া মহল্লার বাসিন্দা। এ ঘটনায় থানায় বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কোন অভিযোগ না দিয়ে গোপনে মীমাংসা করার অভিযোগ ওঠেছে মনোহরদী পৌরসভার কর্তাদের বিরদ্ধে।

মনোহরদী পৌরসভার সচিব মো. ইসমাইল মিয়া টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মো. ইসমাইল মিয়া বলেন, পৌরসভার কোষাগারের ৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা এবং তার ব্যক্তিগত ১৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করে অন্য একটি একাউন্টে জমা দেওয়ার জন্য চেক দিয়ে ব্যাংকে পাঠানো হয় পিয়ন তুহিনকে। পরে ২৫ এপ্রিল ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে বুঝতে পারি ব্যাংক হিসাবে কোন টাকা নেই। সে ব্যাংকে টাকা জমা না দিয়ে সব টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তুহিনকে ফোন করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর থেকে সে অফিসেও আসছে না। তার বাড়িতে খোঁজ নিয়েও তাঁর খোঁজ মেলেনি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজার পর গত সোমবার তাকে কক্সবাজার থেকে ধরে আনা হয়। এরপর থেকে তুহিন পৌর মেয়রের হেফাজতে রয়েছে।

টাকা উদ্ধারে কোন প্রকার আইনের আশ্রয় নেয়া হয়েছে কী না জানতে চাইলে ইসমাইল মিয়া জানান, মেয়র মহোদয় মীমাংসার আশ্বাস দিয়েছেন। যদি মীমাংসা না হয় তাহলে অবশ্যই তার বিরদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পিয়ন অফিস করছেন না। দুই বছর আগেও উক্ত পিয়ন তিন লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। বারবার এমন অপরাধ করেও পিয়ন তুহিনের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় না নেয়ায় অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পৌরসভার এক কর্মচারী জানান, পিয়ন মো. তুহিন আইপিএল ও অনলাইনের বিভিন্ন জুয়ায় আসক্ত। প্রায় দুই বছর আগেও সে পৌরসভার ৩ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। পরে পৌর মেয়র আমিনুর রশিদ সুজন বসে পারিবারিকভাবে মীমাংসা করে তাকে পুণরায় কাজে ফেরান।

পলাতক ও মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে অভিযুক্ত তুহিনের কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

জানতে চাইলে মনোহরদী পৌরসভার মেয়র আমিনুর রশিদ সুজন সাংবাদিকদের বলেন, টাকা জমা দিতে যাওয়ার সময় পিয়ন তুহিন তার ভাইয়ের দুর্ঘটনার খবর পায়। এজন্য সে টাকা জমা না দিয়ে চিকিৎসার কাজে ব্যয় করে ফেলে। পরে সে টাকা জমা দিয়ে দেয়। এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। অফিসিয়ালভাবে মীমাংসা হয়ে গেছে। সে এখন অফিস করছে বলেও জানান মেয়র।