পাখির ভাষায় কথা বলে তুরস্কের এই গ্রামবাসীরা! (ভিডিও)

তুরস্কের এই গ্রামবাসীরা ক্ষেতে কাজ করেন আর কথা বলেন। বাসা-বাড়িতেও সেভাবেই ভাষা বিনিময় করেন।

সবাই তো তাই করে। কিন্তু তাদের রয়েছে গোপন এক ভাষা। সেখানে কোনো শব্দ বিনিময় হয় না। তারা মুখ দিয়ে শিস বাজান। সেই শিসের বিভিন্ন অর্থ রয়েছে।

এই ভাষা ‘পাখির ভাষা’ নামেই পরিচিত। মূলত দূরের কারো সঙ্গে চিৎকার করে কথা না বলে তারা শিস দিয়ে বোঝান। শিসের শব্দ জোরে হয়ে এবং তা সহজেই যাকে উদ্দেশ করে বলছেন তার কানে পৌঁছে। কেউ হয়তো ক্ষেতে কাজ করতে করতে দূরের কাউকে শিস দিলে বুঝিয়ে দিলেন যে তার কাস্তেটা দরকার।

কেউ হয়তো পাহাড়ের ওপরের বাড়ি থেকে শিস দিয়ে নিচের দোকানদারকে বললেন যে তার দুটো রুটি দরকার।

উচ্চমাত্রার শব্দের এই শিসগুলো গ্রামবাসীদের ভাষা বিনিময়ের অনন্য মাধ্যম হয়ে উঠেছে। পাহাড়বেষ্টিত এই গ্রামে এটা দারুণ সুবিধা করে দিয়েছে গ্রামবাসীদের। এ গ্রামের ছেলে থেকে বুড়ো সবাই শিস বাজাতে তাই দারুণ দক্ষ।

আশপাশের বাড়ির লোকজনেরা প্রতিবেশীধের সঙ্গে এই গোপন ভাষায় কথা বলেন। আপনি শিস শুনে কিছুই বুঝবেন না। কিন্তু তারা পরস্পরের শিসের ভাসাটা বুঝে নেবেন। একজন পাশের বাড়ির চিকিৎসকের উদ্দেশে শিস দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন যে তার পায়ে ব্যথা করছে। জবাবে চিকিৎসক জানালেন তিনি এসে দেখে যাবেন। আরেক নারী তার প্রতিবেশীকে শিস দিয়ে বিকেলে চায়ের দাওয়াত দিলেন। বিনিময়ে নিমন্ত্রণ গ্রহণের জানান দিলেন আরেকজন। ক্ষেতে কাজ করা কৃষকদের উদ্দেশে একজন শিস দিয়ে বললেন, খাবার প্রস্তুত। তোমরা খেতে আসো। কৃষকরাও শিসে জানালেন তারা আসছেন। স্কুলের বাচ্চা শিস দিয়ে তার বন্ধুকে বললো, কিছু অংক কষা দরকার, চলো একসঙ্গে অংক করি। বন্ধুও জানালো, আমি আসতে পারছি না, খেলতে যাবো।

বর্তমানে ১০ হাজারের মতো মানুষ পাখির ভাষায় কথা বলতে পারেন। একসময় মানুষ যখন ইশারায় মনের ভাব প্রকাশ করতো, তখনই শিস ভাষা হয়ে ওঠে। ইউনেস্কো একে বিলুপ্তপ্রায় ভাষার তালিকায় তুলে দিয়েছে। তাই তুরস্কের এই গ্রামবাসীর পাখির ভাষা চর্চার বিষয়টি আশার আলো জাগায়।

এই ভাষা নিয়ে বছর শেষে মেলার আয়োজন হয় গ্রামে। সেখাই পাখির ভাষাকে টিকিয়ে রাখতে সবাই মতামত জ্ঞাপন করেন।

In Turkey They Don't Speak, They Whistle

These Turkish villagers have a secret language 🎵

Posted by Vocativ on Sunday, December 24, 2017