পাবনায় বেড়েছে পেঁয়াজের ঝাঁজ; ৬ ব্যবসায়ীকে জরিমানা

ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধের ঘোষণায় পাবনায় হঠাৎ করেই অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে বিভিন্ন হাটে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজের সরবরাহ কম। এর কারণ হিসেবে চাষিরা জানান, গত তিনদিনের বৃষ্টি। বৃষ্টির জন্য ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ তুলতে পারেননি চাষিরা। এতে হাটে পেঁয়াজ কম থাকায় চাষি ও বাধাইকারকরা দাম বাড়িয়ে দেন। সকাল ৯টার দিকে পুরোনো পেঁয়াজ (হালি পেঁয়াজ) বিক্রি হয় সাত হাজার টাকায়। নতুন মূলকাটা বা মুড়ি পেঁয়াজ বিক্রি হয় প্রতি মণ পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকায়।

এদিকে, রপ্তানী বন্ধের খবরে শনিবার মুহূর্তেই ১০০ টাকা থেকে পেঁয়াজের দাম বেড়ে ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। দুপুরে সদর উপজেলার সিঙ্গাবাজার ও শহরের বড় বাজারে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাহমুদ হাসান রনি জরিমানা করেন।

মাহমুদ হাসান রনি জানান, ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধের ঘোষণার পর হঠাৎ করেই বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। পরে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে দুপুরে সিঙ্গাবাজার ও শহরের বড় বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দেখা যায়, ১০৫ টাকায় কিনে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রির দায়ে ৬ জনকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মজুদ করা পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

অভিযানের খবর পেয়ে বেশকিছু খুচরা ব্যবসায়ী দোকান ফেলে পালিয়ে যান। পরে সব পেঁয়াজ উপস্থিত ক্রেতাদের মাঝে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়।

বনগ্রাম হাটের কয়েকজন বেপারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাটে আমদানী কম থাকায় পেঁয়াজের দাম বেশি। তারা ইচ্ছা করে দাম বাড়াতে পারেন না। এটা চাহিদা ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে। তবে তারা আশা করছেন মূলকাটা বা মুড়ি পেঁয়াজের মৌসুম পুরোদমে শুরু হলে দাম কমবে।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, পাবনা জেলায় এ বছর ৮ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে কন্দ বা মূলকাটা পেঁয়াজ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন। গত বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৫ হেক্টর। গত বছর চাষিরা পেঁয়াজ চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারা সরিষা চাষে বেশি ঝুঁকে পড়েছিলেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপ পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন জানান, এবার বর্ষা মৌসুম দীর্ঘায়িত হওয়ায় মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপণে দেরী হয়েছে। ফলে তা বাজারে আসতেও কিছুটা দেরী হচ্ছে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে পুরোদমে পেঁয়াজ সরবরাহ শুরু হলে দাম কমে আসবে।

তিনি আরও জনান, আবহাওয়া ভালো। মাঠকর্মীরা চাষিদের সব সময় পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছেন। তিনি জানান, পেঁয়াজের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদনও বাড়ছে। চাষিরা ন্যায্যমূল্য পাবেন বলে তারা আশাবাদী।