পাবনার আটঘরিয়ায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন: কৃষকের মুখে রঙিন হাসি

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় ২ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের সরিষার বাম্পার ফলন ও আবাদ হচ্ছেও ভাল। ফলে সরিষা চাষ করে অর্থ উপার্জন করায় বোরো চাষের খরচ উঠেও উদ্বৃত্ত থেকে যাচ্ছে কৃষকদের। বিলের বিপুল পরিমাণ জমিতে সরিষার ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এলাকায় ভোজ্য তেলের আমদানী নির্ভরতাও কমেছে। চলতি মৌসুমে সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে একাকার হয়ে গেছে উপজেলার ফসলের মাঠ।

এই প্রতিনিধি সরজমিন দেখেন, চলতি মৌসুমে দেবোত্তর, একদন্ত, লক্ষীপুর, চাঁদভা, মাজপাড়া ও আটঘরিয়া পৌর এলাকায় চলতি মৌসুমে ২৫৬০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল সরিষা চাষ হচ্ছে। গত বছর সরিষা আবাদ হয়েছিল ২৫২০ হেক্টর জমিতে। তবে এ মৌসুমে ৪০ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষা আবাদ করছেন কৃষকেরা। সরিষা ক্ষেতগুলো হলুদ ফুলে ফুলে একাকার হয়ে গেছে। বিল এলাকার কৃষকদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বিনা মূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করেছে সরকার।

কৃষকরা আশা করছেন, এবার বাম্পার ফলন হবে। পোকা মাকড়ের আক্রমণরোধে কৃষকদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর কৃষি অফিসের কর্মকর্তারাও সজাগ থাকায় অতি দ্রুত তা রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

আটঘরিয়া উপজেলার চাঁদভা ইউনিয়নের নাগদগ গ্রামের মোঃ ইদ্রিস আলী, আসাদুজ্জামান, সিরাজসহ অনেকেই জানান, চলতি মৌসুমে ২/৩ বিঘা করে জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। বিঘা প্রতি প্রায় ৭ মন হারে ফলন পাওয়া যায়। এবার মৌসুমের শুরুতেই সরিষার ভালো ফলন দেখা দিয়েছে। তারা আরো জানান, এ এলাকার কেউ জমি চাষ করে সরিষা বপণ করেন আবার কেউ কেউ বিনাচাষে পতিত জমিতে বীজ ছিটিয়ে সরিষা আবাদ করেন।

উপজেলার সিংহড়িয়া এলাকার কৃষক আরিফ সরদার জানান, বিল থেকে বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর কৃষকেরা সে জমিতে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বিঘা প্রতি প্রায় ৭ মন হারে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। ১৫/২০ বছর যাবত এভাবে সরিষা চাষ করে কৃষক উপকৃত হচ্ছেন। কৃষক আরিফ জানান, দুই বিঘা জমিতে সরিষা চাষে ৫-৬ হাজার টাকা খরচ হয় এবং প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা লাভ থাকে।

আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সজীব আল মারুফ জানান, এবছর কৃষকেরা বারী-১৪, ১৭, বিনা-১০, টরি-৭ জাতের সরিষা আবাদ করছেন। সরিষার খুবই ভালো ফলন হয়েছে। তবে হেক্টর প্রতি গড় ফলন পাওয়া যায় ১.২ (এক দশমিক দুই) টন। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া সরিষা চাষের অনুকূলে আছে। আশা করা যাচ্ছে কৃষকেরা এবার ভাল ফলন পাবে।