পাবনার চাটমোহরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ!

আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে হতদরিদ্র অসহায়দের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নবীর উদ্দিন মোল্লার দুই নিকট আত্মীয়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বামনগ্রামসহ আরও দু’টি গ্রামের অন্তত ৩০/৪০ জন হতদরিদ্র ব্যক্তির কাছে থেকে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নবীর উদ্দিন মোল্লার চাচাতো ভাই রেজাউল ও আরজু ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়েছেন। ভুক্তভোগী প্রতিজনের নিকট থেকে ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এত টাকা দিয়েও সরকারি ঘর না পেয়ে ভুক্তভোগীরা টাকা ফেরত চাইলে তাদের টাকা না দিয়ে উল্টো হুমকি ধামকি দিচ্ছেন চেয়ারম্যানের আত্মীয়রা। কোনো উপায় না দেখে প্রতারণার শিকার হতদরিদ্র অসহায় মানুষগুলো প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ভূক্তভোগী ধানবিলা গ্রামের আবু হানেফের ছেলে আছাদ আলী বলেন, ‘সরকারি ঘর পাওয়ার জন্য অন্য সকলের মতো আমিও প্রায় দেড় বছর আগে চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই রেজাউলের কাছে ৫০ হাজার টাকা দেই। কিন্তু আজ অবধি আমাকে ঘর দেওয়া হয়নি। টাকা ফেরত চাইলে অমুক দিন দিবো বলে তালবাহানা করে আসছে।’

অপর ভুক্তভোগী বামনগ্রামের মৃত সুলতান শেখের ছেলে সুজন শেখ বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার কথা বলে চেয়ারম্যানের চাচাতো ভাই রেজাউল ও আরজু আমার নিকট থেকে দুই বছর আগে ৪০ হাজার টাকা নিয়েছে। চেয়ারম্যান নিজ হাতে টাকা না নিয়ে তাদের দিয়ে টাকা নিয়েছে। এখন পর্যন্ত আমি ঘর পাইনি। কয়েকবার টাকা চাইতে গেলে তারা বলে অফিসে টাকা দেওয়া হয়েছে, অফিস টাকা ফেরত দিলে তোমাদেরও টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানায়।’

অভিযুক্ত রেজাউল ও আরজু বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। তারা কারো কাছ থেকে সরকারি ঘর দেবার কথা বলে টাকা নেননি। সামনে ইউপি নির্বাচন। বর্তমান চেয়ারম্যান নবীর উদ্দিনকে বেকায়দায় ফেলতে প্রতিপক্ষের লোকজন সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করে এই অভিযোগ দিয়ে ফায়দা লুটতে চায়।’

অভিযোগের বিষয়ে ডিবিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ইউপি) নবীর উদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘শুনেছি আমার নাম ভাঙিয়ে এলাকার কিছু মানুষ ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। ঘটনাটি আমি কিছুই জানি না। যারা টাকা দিয়েছে তারাও আমাকে কিছুই বলেনি।

গত দুইদিন আগে কয়েকজন এসে আমাকে বিষয়টি জানালে তাদের বলেছি এখন আমি কিছুই করতে পারবো না। পরে সময় নিয়ে বসে এর সুরাহা করে দিবো।’

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সৈকত ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে এমন ঘটনার সত্যতা পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’