বালু দিয়ে ব্যতিক্রমী শিল্প গড়ে বাংলাদেশি তরুণের চমক

জন্মভূমি সাতক্ষীরা কিংবা শিক্ষাভূমি খুলনার প্রকৃতির সঙ্গে অন্ত্যমিল খুঁজে ফিরেছেন তরুণ চিত্র শিল্পী সত্যানন্দ পাইক। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় শিক্ষা নেওয়া সত্যানন্দ প্রকৃতির রূপ-রঙ-আবহকে কাঁটাতারে অন্য পাশে আরেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।

তবে সেটা খানিকটা ভিন্নভাবে, চিত্র শিল্পে যাকে মিশ্র মাধ্যম বলেই চেনেন সকলে। রঙের সঙ্গে আঠা মিশিয়ে তাতে বালু দিয়ে বিভিন্ন তাপমাত্রায় ফুটিয়ে তুলেছেন নদী, গাছপালা, খেলার মাঠ, পথ-ঘাট ইত্যাদি।

কলকাতার একাডেমি অব ফাইন আটর্সে মূল ভবনের গ্যালারি জুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে তরুণ শিল্পী সত্যানন্দ পাইকের আঁকা ২২টি চিত্রকর্ম। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পর উচ্চতর শিক্ষার জন্য রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি এখন অধ্যয়নরত।

শনিবার সন্ধ্যায় ‘প্রকৃতির অন্বেষণ’ শিরোনামে তাঁরই আকা ছবি নিয়ে ছয় দিনের একক প্রদর্শনী শুরু হয় কলকাতায় যা চলবে আগামী ৬ জুলাই রাত ৮টা পর্যন্ত।

ভাষাবিদ ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের প্রথম সচিব (প্রেস) মোফাকখারুল ইকবাল ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কলকাতার বিশিষ্টজনরা।

একাডেমি অব ফাইন আটর্সের মুল ভবন গ্যালারিতে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কলকাতার দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে প্রদর্শনীর দরজা।

“বাংলাদেশের বর্ষা, গাছ, নদী, প্রতিবেশী সব কিছুই যেন আমার স্মৃতি জানাল খুলে দিয়েছে সত্যানন্দের আঁকা ছবি দেখে”- বলেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. পবিত্র সরকার। “শুধু এই স্মৃতি উসকে দেওয়ার কথা বলেই হবে না বরং সত্যানন্দর যে কারিগরি, যে শিল্প বালুকে নানা ভাবে রূপ দিয়ে যে চিত্রকর্ম তৈরি করেছে সেটা এককথায় অসাধারণ,” যোগ করেন তিনি।

নিজের এই ব্যতিক্রমী সৃষ্টি নিয়ে বলতে গিয়ে নিজেই স্বীকার করে ফেললেন যে আট-নয় বছর আগেও ছবি আঁকা কিংবা চিত্র সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণাই ছিল না। খুলনা আর্ট কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই নিজের মধ্যে এই বোধ তৈরি হতে শুরু করে এবং সেটাই আজ তাঁকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছে।

সত্যানন্দ বললেন, সাধারণ বালু হলেও সেটাকে নানা তাপমাত্রায় এনে রঙের সঙ্গে মিশিয়ে তিনি প্রকৃতির অন্বেষণ করেছেন। জন্মভূমি বাংলাদেশ, বিশেষ করে সাতক্ষীরা, খুলনাসহ আশপাশের এলাকার প্রকৃতির রূপই তাঁর শিল্পের মূল আধার।