মেহেরপুরে শ্রমিক সংকটে মাঠে পড়ে আছে কাটা ধান

ধান কাটার পরেও শ্রমিক সংকটে মেহেরপুরের ধানচাষীদের কাটা ধান জমিতেই নষ্ট হচ্ছে। আবার অশনির বৃষ্টিতে পাকা বোরো ধান ÿেতে জমে থাকা পানিতে মিশে আছে। শ্রমিক সংকটের কারণে ধান ঘরে তুলতে না পারায় জমিতেই ধান থেকে গাছ বেরিয়ে যাচ্ছে।

রোববার মেহেরপুর সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের মাঠে দেখা গেল কৃষক সবুজ মিয়া জমি থেকে একাই কাটা ধান আঁটি বেঁধে মাথায় করে বাড়ি নিয়ে আসছেন। তিনি জানান শ্রমিক সংকটের কারণে কাটা ধান মাড়তে পারছেন না। একাই দেড় কিলো দুর থেকে দিনভর খ্যাপ মারছেন। বাড়ির উঠানে নিতে পারলে বউ ঝি মিলে ধান ঝেড়ে নেবেন বলে জানান। তিনি জানান তার মতো অনেক চাষী ধান কাটার পরেও শ্রমিক সংকটে ধান মাড়ায় করতে পারছেন না। জমিতেই পালা দিয়ে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। শ্রমিক সংকট কাটলে ধান মাড়ায় করে ঘরে তুলবেন।

একই গ্রামের ধানচাষী মাহবুব হোসেন জানান- অশনির প্রভাবে বৃষ্টিতে তার দেড় বিঘা জমির কাটা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। সেসব ধান থেকে ট্যাক বেরিয়ে গেছে। তার মতো কয়েক শ কৃষক বিপর্যস্ত্ম হয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। চাষীরা জানিয়েছেন, শ্রমিক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। উপায়ান্ত্মর না পেয়ে কৃষক পরিবারের নারী-পুরম্নষরা এখন পানি থেকে বোরো ধান ঘরে তুলতে প্রানপণ চেষ্টা করছেন। কৃষকরা জানান- এখন আম লিচু সংগ্রহের সময়। এই সময় আম লিচু নামানোর কাজে মুজুরি বেশী পাওয়া যায় বলে শ্রমিকরা সেসব কাজে ঝুঁকে পড়ে। ফলে রোদে পুড়ে মাঠের কাজে শ্রমিকদের অনিহা। তাছাড়া আম লিচু সংগ্রহের কাজে মুজুরির সাথে দুপুরে খাওয়া ও আম লিচুও পাওয়া যায়।
\হজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে জেলাসদর, মুজিবনগর ও গাংনী উপজেলা মিলে জেলায় ২০ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, জেলার কয়েক হাজার কৃষক পরিবারের মধ্যে বোরো মৌসুমে অর্ধেকেরও বেশি বর্গা চাষী রয়েছেন। যাদের জমির ধান আগাম পেকেছে তারা রমজান মাসের মধ্যেই তা কেটে ঘরে তুলেছেন। তবে এর সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ। বাকি অর্ধেক চাষীর ধান বিলম্বে পাকার কারণে অশনি’র কবলে পড়েছে। ওইসব চাষীরাই এখন শ্রমিক সংকটের কারনে বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত্ম হচ্ছেন।