রামরহিমের ডেরাতে রাতের আধারে কি হতো? জানালেন পালিয়ে আসা এক ‘রাধিকা’

হরিয়ানার ডেরা সচ্চা সওদাকে ঘিরে একের পর এক তথ্য উঠে আসছে যা হাড়ি হিম করে দেওয়ার মতো৷ আর এবার আজ তক-কে দেওয়া এক রাধিকার সাক্ষাৎকার যেন বাকরুদ্ধ করে দেবে সকলের৷

প্রায় ৭ বছর রাম রহিমের ডেরাতে কাজ করেছে এই রাধিকা৷ কিন্তু সেখানে থেকেই পরে তাকে পালিয়ে আসতে হয়৷ কেন জানেন?

ভন্ডবাবা রামরহিম সারারাত নাচ করত৷ রাতে ৪-৫বার পোশাক বদলে ফেলত রামরহিম৷ নিজে গান করত, স্কুলের বাচ্চারাও নাচ করত৷ এর জন্য টিকিট লাগত৷ এই টিকিটের মূল্য সাত হাজার থেকে শুরু হত৷

গুরমিতের যত কাছে ভক্তরা যেতে চাইবে, ততই বেশি দিতে হত টিকিটের মূল্য৷ আর তা ১ থেকে ৮ লাখ পর্যন্ত পৌঁছে যেত৷ তবে রামরহিমের মতে, এই টাকা দুঃস্থদের চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হত৷ কিন্তু বাস্তবে রাধিকার চোখে তা পড়েনি৷

রাধিকাকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসে তার নাম বদলে ফেলা হয়েছিল৷ নতুনদের একটি হল ঘরে নিয়ে গিয়ে সেখানেই নামকরণ হত৷ এই ডেরাতেই একটি ছেলেক তার ওপর নজর রাখার জন্য রাখা হয়৷ শুধু তাই নয়, ডেরার পুরুষদের সঙ্গে থাকতেও বাধ্য করা হয়েছিল৷

ডেরার ভক্ত বা বাইরের ভক্তরা তাদের কুমারী মেয়েদেরকে গুরমীতের কাছে দান করে যেত৷ ৩-৪ বছর ধরে এদের ট্রেনিং দেওয়া হত, সেই ট্রেনিংয়ের নামে চলত সেবাদানের পর্ব৷ এদের তখন ব্রহ্মচারী বলা হত৷

৩-৪ বছর পরে তাদের ইন্টারভিউ হত৷ এরপর তাদের গুরমিত প্রসাদ দিত৷ তারপর থেকে তাদের বলা হয় সেবাদার৷ তবে এই প্রসাদ কিন্তু যে সে প্রসাদ নয়৷ রামরহিমের বিশেষ প্রসাদ, যার নামের আড়ালেই চলত অপকর্ম৷

২০০৭ সালে যখন সিবিআই কেস হয় গুরমিতের বিরুদ্ধে, তার ভয় ছিল, কুমারী এই সাধ্বীরা সংবাদমাধ্যমের সামনে বেফাঁস যাতে কিছু না বলে দেয়, তার জন্য তখন সাধ্বীদের বাসস্থান বদলে দেওয়া হয়৷ এদের সঙ্গে যাতে বাইরের কেউ দেখা না করতে পারে সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছিল৷

পরিবারের সদস্যরা কখনও কখনও দেখা করতে আসত৷ গুরমিতের এই গুহাতে যে অপকর্ম চলে সে বিষয়ে অনেকেই জানত৷ কিন্তু মুখ খোলার সাহস ছিল না কারোর৷ রাতের বেলাতে সৎসঙ্গ-এর অজুহাতে খারাপ কাজই হত এখানে৷

হানিপ্রীত রাধিকাকে আন্টি বলে সম্বোধন করত৷ গুরমিতের গুহাতে হানিপ্রীতের যাওয়া আসা ছিল৷ গুরমিত কোথাও গেলে তার সঙ্গে সঙ্গেই থাকত হানিপ্রীত৷ প্রথম প্রথম সে ঠিক থাকলেও পরে অন্যদিকে বিষয় এগোয়৷

রাধিকার মতে হানিপ্রীতের শ্বশুরবাড়ির সদস্যেরা খুবই সহজ-সরল৷ রামরহিমই তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার জন্য হানিপ্রীতকে উসকে দেয়৷ রামরহিমের ডেরা থেকে পালিয়ে রাধিকার এমনই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসে৷ তবে এখানেই যে শেষ নয়, গুহার গল্প যে আরও অনেক রহস্যে মোড়া তেমনই মনে করছে এখন অনেকেই৷