ডিআইজি’র সংবাদ সম্মেলন

ইউএনও ওয়াহিদা খানম হত্যা চেষ্টা মামলার নতুন মোটিভ উদঘাটন

ইউএনও ওয়াহিদা খানম হত্যা চেষ্টা মামলা নতুন সূত্র পেয়েছে পুলিশ। চুরির দায়ে চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত মালি রবিউল ইসলাম আক্রোশ বসত ইউএনওর উপর হামলা চালিয়েছেন বলে নতুন তথ্যা পাওয়া গেছে। একজন সাক্ষী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবাববন্দি দিয়েছেন।

আসামি রবিউলকে তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রিমান্ড শেষে দুই আসামি আসাদুল হক ও নাহিদুল হোসেন পলাশকে শনিবার জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য বলেছেন, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হত্যার চেষ্টার ঘটনায় ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত মূল আসামিকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

শনিবার বিকেলে দিনাজপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মুখে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য এক প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য প্রদান করেন।

তিনি বলেন, এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা সংগঠিত হওয়ার পর দিনাজপুর পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও মূল অপরাধীকে গ্রেফতার করতে সক্রিয় ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সেই ফলশ্রুতিতেই মামলার আসামি ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের চুরির ঘটনায় বরখাস্ত হওয়া মালি রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত রবিউল দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার ধামইরহাট ভীমপুর গ্রামের খতিব উদ্দিন আহম্মেদের পুত্র। তাকে গত জানুয়ারী মাসে চুরির ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তার নিকট ইউএনওকে হত্যার চেষ্টায় ব্যবহৃত হাতুড়ি ও অন্যান্য উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে।

ব্রিফিং কালে পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আবু ইমাম জাফরসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ইসরাইল হোসেন জানান, শনিবার বিকেল ৫টায় দিনাজপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ ইসমাইল হোসেনের আদালতে রবিউল ইসলাম (৩৬) কে আদালতে সোপর্দ করা হয়। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আবু ইমাম জাফর গ্রেফতারকৃত রবিউলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। বিচারক শুনানীন্তে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ডিবি পুলিশ পরিদর্শক জানান, শনিবার সন্ধ্যায় তাকে তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে হত্যা চেষ্টায় ব্যবহৃত হাতুড়ি দিনাজপুর শহরের মুন্সিপাড়া থেকে ক্রয় করা হয়েছিলো। ওই হাতুড়ি গত শুক্রবার মধ্যরাতে ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাস ভবনের সম্মুখের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। হাতুড়ি ক্রয়কৃত গ্রাহক রবিউলকে শনাক্ত করে দোকানের মালিক শহরের মধ্য বালুবাড়ী এলাকার সাহেব আলীর পুত্র খোকন আলী শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ইসমাইল হোসেনের নিকট স্বাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।

এদিকে, এই মামলায় গত ৬ সেপ্টেম্বর আদালত থেকে ৭ দিনের রিমান্ডে থাকা গ্রেফতারকৃত আসামি আসাদুল হক (৩৫) এবং শুক্রবার গ্রেফতার হওয়া আসামি নাহিদুল হোসেন পলাশকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। পলাশ ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের নৈশ্য প্রহরী হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

এরআগে শুক্রবার অপর ২ আসামি সান্টু কুমার দাস ও নবীরুল ইসলামকে ৭ দিন রিমান্ড শেষে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ভোর রাতপর্যন্ত ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদে সম্মুখে পুকুর থেকে ইউএনওকে জখমের কাজে ব্যবহৃত হাতুড়ি, চাবির থোকা, একটি কাঠের মই ও অন্যান্য উপকরণ আলামত হিসেবে ডিবি পুলিশ উদ্ধার করেছে।