গরীবের বন্ধু গরুর ছাটকাট উচ্ছিষ্ট মাংস

বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা কিনে খাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক মনে হলেও নিন্ম আয়ের মানুষের কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতো।

তবুও তারা মাংসের দোকানের সামনে ভীড় জমায় এবং দামটা জিজ্ঞেস করে, অনেকে দাম শুনে আস্তে ধীরে পিছু হটেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারনে তাদের কাছে দুর্লভ ও আভিজাত্যের খাবারে পরিণত হয়েছে গরুর মাংস।

মন-কে একরকম মানিয়েই নিতে হয়েছে এই মাংস আমাদের জন্য নয়। তাই গরুর ছাটকাট উচ্ছিষ্ট হয়েছে এখন গরীবের বন্ধু মাংস।

এই চিত্র দেখা গেছে, দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার হাট – বাজারগুলোতে। সামর্থ্য না থাকায় আর দামে কম হওয়ায় গরুর মাংসের স্বাদ নিতে ক্রেতারা ঝুকছে ছাটকাট গরুর মাংস কিনতে।

ছাটকাট মাংস কি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বীরগঞ্জ পৌর বাজারের মাংস ব্যবসায়ী রবি মিয়া(৩৩) জানান গরুর মাংস বিক্রি হওয়ার পর চর্বি,পর্দা,রগ,মাথার সাইডের হাড় মাংস,নাকের হাড়,ভুড়ির কুস্তাসহ মাংসের উচ্ছিষ্ট একত্র করে বিক্রি করি।

উপজেলার ১১ নং মরিচা ইউনিয়নের গোলাপগঞ্জ হাট,বীরগঞ্জ পৌর হাট সহ বিভিন্ন হাট বাজারে কম মুল্যে এসব উচ্ছিষ্ট গরুর ছাট মাংস কমদামে পাওয়া যায়।

গোলাপগঞ্জ হাটে ছাট মাংস বিক্রেতা শেখ আব্দুল জব্বার(৫৫) জানান, বীরগঞ্জ পৌর বাজার সহ আশেপাশের এলাকায় বিভিন্ন কসাইয়ের কাছ থেকে প্রতিকেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা দরে ২০-২৫ কেজি সংগ্রহ করে, এই ছাট মাংস ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে সোমবার ও বৃহস্পতিবার হাটে বিক্রি করি।

আর এই মাংসগুলো কিনতে আসে নিন্ম আয়ের মানুষ।
ছাটকাট মাংস ক্রেতা, ভ্যান চালক মোঃ সাফিয়ার (৪৫) নিজের ক্ষোভ আর হতাশা উগড়ে দিয়ে জানান , জায়গা জমি নাই, আমি দিন আনি দিন খাই, কোনদিন ৩০০ কোনদিন ৪০০ টাকা আয় হয়। পরিবারের সদস্য ৫ জন, মেয়ে জামাই বেড়াতে এসেছে, নাতি গরুর মাংস খেতে চেয়েছে কিন্তু আমার গরুর মাংস কিনার সামর্থ্য নেই তাই দামে কম হওয়ায় নাতিকে নিয়ে ছাটকাট মাংস কিনতে এসেছি।

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে। মধ্যবিত্তের জন্য কোনো জায়গা থাকছে না। নিম্নবিত্তরা আরও নিচে ধাবিত হচ্ছেন। সবকিছু ক্রয়সীমার বাইরে চলে যাচ্ছে।

বীরগঞ্জ উপজেলা সেনেটারী ইন্সপেক্টর মোঃ ফরিদ বিন ইসলাম কালের কন্ঠকে জানান, এই উচ্ছিষ্ট মাংস খাওয়া যাবেনা তা না, তবে না খাওয়াই উত্তম। এই উচ্ছিষ্ট মাংস বিক্রি বন্ধে, বিভিন্ন হাট বাজারে কয়েকবার অভিযানও চালিয়ে ছাট মাংস জব্দ করে পুতে দিয়েছি এবং ভোক্তা অধিকার মাধ্যমে কয়েকবার জরিমানা করেছি।